সিপ্লাস ডেস্ক: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের শুল্ক বিভাগের গুদাম বা ভল্ট থেকে ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি সোনা চুরির ঘটনায় চার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কাস্টমস হাউস কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) কাস্টমস হাউসের ঊর্ধ্বতন সূত্র বিষয়টি গণমাধ্যমকেশে বলা হয়, এ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের ট্রানজিট ও মূল্যবান গুদামে পদস্থ ছিলেন। গত ১ আগস্ট তাদের ট্রানজিট ও মূল্যবান গুদাম হতে এয়ারফ্রেইট ইউনিটে পদস্থ করা হয়। নিয়মানুযায়ী রাষ্ট্রীয় গুদামের মালামাল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা করেননি তারা।
গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে শুল্ক গুদামে প্রবেশের লক (তালা) অ্যান্ড কি (চাবি) নিয়ন্ত্রণ না করা, গুদামে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রয়েছে কিনা তা মনিটরিং করে নিয়মিত প্রতিবেদন না দেওয়া, যথাসময়ে টিজিআর গুদামের মূল্যবান পণ্য ভিজিআর গুদামে স্থানান্তর না করা, সর্বোপরি ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি সোনা তাদের হেফাজত থেকে হারানো ঘটনাকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে এ চারজনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে সোনা চুরির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা চলায় গোয়েন্দা বিভাগ। এখন পর্যন্ত কাস্টমসের আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চারজন সিপাহী। তবে, সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকে। সোনা চুরির ঘটনায় আলোচিত এ মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
প্রায় ৫০ কোটি টাকার সোনা চুরির ঘটনায় গত ৩ সেপ্টম্বর রাতে বিমানবন্দর থানায় ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
২২ আগস্ট একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, ঢাকা কাস্টম হাউসের বিমানবন্দর ট্রানজিট গুদামে প্রায় ১৫০ ভরি ওজনের সোনা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ ৬টি ডিটেনশন মেমোর পণ্যের হিসাবে গড়মিল পাওয়া যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সোনা চুরির এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রোববার। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি সোনা চুরি বা বেহাত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে অজ্ঞাতদের আসামি করে। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে কাস্টমস হাউজ।