৫৪তম দেশ হিসেবে নাসার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি 

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। বাংলাদেশ এখন ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’-এর ৫৪তম স্বাক্ষরকারী দেশ। এই চুক্তির মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বিনিয়োগ সম্মেলন নিয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার প্রেস স‌চিব শ‌ফিকুল আলম।

তিনি জানান, ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’-এর স্বাক্ষরকারী ৫৪তম দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তার মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে। তবে এর সুফল হয়ত এখনই পাওয়া যাবে না, ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লেগে যাবে।

এর আগে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন এ চুক্তিতে সই করেন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা, মহাকাশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও মহাকাশ সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহারে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, চুক্তিটি সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ গবেষণায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে।

প্রতিরক্ষা সচিব আশরাফ উদ্দিন বলেন, আর্টেমিস চুক্তি মূলত আউটার স্পেস ট্রিটি রেজিস্ট্রেশন কনভেনশন ও অ্যাস্ট্রোনট রেসকিউ অ্যাগ্রিমেন্টের নীতিগুলো অনুসরণ করে তৈরি একটি নির্দেশিকা, যা মহাকাশের শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও টেকসই ব্যবহারে সহায়ক।

তিনি বলেন, মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার জন্য ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকে বাংলাদেশ মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করছে।

তিনি আরও বলেন, চুক্তি সই করা দেশগুলো মহাকাশে স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেয়।

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৩টি দেশ এ চুক্তিতে সই করেছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া। এ ছাড়া, ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ এ চুক্তিতে সই করেছে।

চুক্তিটিতে সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহাকাশ জোটের অংশীদার হবে বলে উল্লেখ করেন আশরাফ উদ্দিন। তিনি বলেন, এ চুক্তির ফলে প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। চুক্তিটি স্পারসো ও নাসার মধ্যে সহযোগিতার পথ উন্মোচিত করবে এবং মহাকাশ অভিযানকে আরও এগিয়ে নিতে স্পারসোর বর্তমান সক্ষমতাকে আরও বৃদ্ধি করবে।

আশরাফ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ যদি নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে, তাহলে এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক মহাকাশ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট ব্যবস্থা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার পথ প্রশস্ত করবে। সেই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট কর্মসূচি, ভবিষ্যতের মহাকাশ উদ্যোগ ও স্পারসোর মতো মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক ও চিফ অব প্রোটোকল এএফএম জাহিদ-উল-ইসলাম এবং স্পারসো চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top