চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চার দিনের মধ্যে চালের দাম আগের পর্যায়ে নিয়ে আসতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ব্যবসায়ীরাও মন্ত্রীর কথায় সায় দিয়েছেন।
আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে ধান-চালের বাজারে ঊর্ধ্বগতি রোধে মতবিনিময় সভায় এসব আলোচনা হয়।
সভায় ক্ষোভ জানিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়াবেন, এটা তো মানা যায় না। যেভাবে চার দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম তুলেছেন, তেমনই চার দিনে কমিয়ে স্ব-স্থানে নিয়ে আসবেন। কারা একমত, কারা একমত নন, সেটা বলেন।’ এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ী সমস্বরে বলেন, ‘ইয়েস স্যার।’
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বাজারে মান ও ধরনভেদে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে ছয় টাকা বেড়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, বেশির ভাগ বাজারে মানভেদে চালের দাম ২ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সরু চালের দাম। তারপর বেড়েছে মাঝারি ও মোটা চালের দাম।
এভাবে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ জানান খাদ্যমন্ত্রী। মিলগেটে ২ টাকা দাম বাড়লে পাইকারি বাজারে ৬ টাকা কেন বাড়বে, সে প্রশ্ন রেখে সভায় তিনি বলেন, অবৈধ মজুতকারী কিংবা অহেতুক দাম বাড়িয়ে দেওয়া ব্যবসায়ী কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। বিনা লাইসেন্সে যারা ধান মজুত করছেন, তারা কোনোভাবেই ছাড় পাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সভায় নওগাঁ ধান চাল মালিক সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, মোটা চালের দাম বাড়েনি। সরু ও মোটা চালের দাম এক নয়। মোটা চালের দাম ২-৩ টাকা বেড়েছে। গত ইরি-বোরো মৌসুমের জিরাশাইল চালের দাম ৫-৬ টাকা বেড়েছে।
চালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য যেভাবে ঢালাওভাবে মিলারদের দায়ী করা হচ্ছে, তা ঠিক নয় বলে দাবি করেন নিরোদ বরণ সাহা। তিনি করপোরেট কোম্পানিগুলো ধান-চালের বাজারকে অস্বাভাবিক বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, মিলারদের প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। দাম বেড়েছিল এটা সত্য, তবে এখন বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামানও বলেন, ধান-চালের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় বাজারের সঠিক চরিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না। সরকারের পরিকল্পনাও সঠিকভাবে কাজ করছে না।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, এফপিএমইউয়ের মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো মেজর রাইস মিল মালিক সমিতি, বাবু বাজার বাদামতলী বণিক সমিতি, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, চাল আমদানিকারকদের প্রতিনিধি ও খুচরা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ