চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ভাইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে মহিউদ্দিন আহম্মদ নামে এক ব্যবসায়ী মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ছোট ভাই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনিকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউসিবি’র সাবেক ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলমগীর কবির অপু এবং নগরীর চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক আবদুল হামিদ চৌধুরীকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় এম এম ট্রেডিং নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মহিউদ্দিন আহম্মদের। সে সুবাদে তার সঙ্গে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ছোটভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই ব্যবসায়ীকে রনি নিজেকে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে রনি তাকে আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
২০২২ সালের ২৫ জুলাই রনির নির্দেশে তিনি ইউসিবি ব্যাংক, চকবাজার শাখায় ৮ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন, যেটা ৮ আগস্ট অনুমোদিত হয়। দু‘দফায় তার অ্যাকাউন্টে ওই ঋণের টাকা জমা হয়। কিন্তু ঋণের চার কোটি টাকা তিনি তুলতে পারেন। বাকি টাকা রনির নির্দেশে ওই শাখার সাবেক ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলমগীর কবির অপু ও ব্যবস্থাপক আবদুল হামিদ চৌধুরী মহিউদ্দিনের চেকে নকল সই করে হাতিয়ে নেন।
২০২২ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ২০ আগস্টের মধ্যে ঋণের ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালের ১০ জুলাই মহিউদ্দিন অভিযুক্তদের কাছে টাকা চাইতে গেলে তারা সেটা অস্বীকার করেন।
বাদীর আইনজীবী শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘চেকে জাল সই দিয়ে মহিউদ্দিন নামে ওই ব্যবসায়ীর চার কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন তারা। টাকা চাইতে গেলে মামলার অভিযুক্তরা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে তাকে মারার হুমকিও দিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাকে আর পরবর্তী সরকারে মন্ত্রী হিসেবে দেখা যায়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগমুহুর্তে জাবেদ স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমান বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ