ক্রীড়া ডেস্ক: বিশ্বকাপের টিকিট, ঘরের মাঠে কোচ কার্লো আনচেলত্তির অভিষেক এবং নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য আজ প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি ব্রাজিলের জন্য ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। আর সেই মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে দারুণ এক জয় পেয়েছে ব্রাজিল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয় ১-০ ব্যবধানে।
গোলের এই ব্যবধান অবশ্য ম্যাচের চিত্রকে পুরোপুরি তুলে ধরতে পারছে না। বাস্তবতা হচ্ছে, আগের ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে নড়বড়ে থাকা ব্রাজিল এই ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উপহার দিয়েছে গতিময় ও আক্রমণাত্মক ফুটবলও।
ম্যাচে ৭৩ শতাংশ বল দখলে রেখে ব্রাজিল শট নেয় ১১টি, যার ৪টি ছিল লক্ষ্যে। ব্রাজিলের আজকের খেলায় আনচেলত্তির কৌশলের ছাপও ফুটে উঠেছে দারুণভাবে। পাশাপাশি এই জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপের টিকিটও নিশ্চিত করল ব্রাজিল।
ঘরের মাঠে অভিষেকের এক দিন আগে নিজের ৬৬তম জন্মদিন পালন করেন আনচেলত্তি। ম্যাচের আগে উপহার হিসেবে শিষ্যদের কাছ থেকে জয়টাই চেয়েছিলেন তিনি। শিষ্যরাও তাঁকে নিরাশ করেননি। জয়ের পাশাপাশি সাও পাওলোতে আজ প্রত্যয়ী ফুটবলও উপহার দিয়েছেন ভিনিসিয়ুস-রাফিনিয়ারা।
ইকুয়েডরের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া হয়েছে অনেক। বিশেষ করে সেই ম্যাচে ব্রাজিলের আক্রমণভাগের দুর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো ম্যাচে মাত্র ৩টি শট নিতে পেরেছিল আনচেলত্তির দল। ম্যাচের পর আক্রমণে গতি আনার কথা বলেছিলেন ব্রাজিল কোচ নিজেও। সেই লক্ষ্যে একাদশে উল্লেখযোগ্য তিনটি পরিবর্তনের কথাও শোনা গিয়েছিল।
ম্যাচের আগে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো যে তিনটি পরিবর্তনের কথা বলেছিল, সেই পরিবর্তন নিয়েই শুরু হয় আজকের ম্যাচটি। গেরসন, এস্তেভাও ও রিচার্লিসনের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, রাফিনিয়া ও মাতেউস কুনিয়া। দলের খেলাতেও এই পরিবর্তনের ছাপ ছিল স্পষ্ট।
আগের ম্যাচে আক্রমণে যেতে হিমশিম খাওয়া ব্রাজিল আজ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়েছে। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই বলের দখল রেখে একের পর এক আক্রমণে যায় তারা। তবে আক্রমণে গেলেও প্যারাগুয়ের রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না তারা। বক্সের ভেতর গিয়ে নষ্ট হচ্ছিল ব্রাজিলের আক্রমণগুলো। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৪৪ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
সমন্বিত এক আক্রমণে রাফিনিয়ার কাছ থেকে বল পান কুনিয়া। তিনি বক্সের ভেতর বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসকে উদ্দেশ্য করে। দারুণ এক ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন ভিনি। এই লিড নিয়েই বিরতিতে যায় ব্রাজিল।
বিরতির পর শুরুর দিকে ম্যাচের গতি কিছুটা মন্থর ছিল। প্যারাগুয়ে এ সময় কয়েকবার আক্রমণে গিয়ে ব্রাজিলকে বিপদেও ফেলার চেষ্টা করে। তবে ব্রাজিলের দারুণভাবে গড়ে তোলা রক্ষণ ভাঙার মতো যথেষ্ট শক্তি দেখাতে পারেনি তারা। কিছুটা সামলে নিয়ে ব্রাজিল আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ৫৯ মিনিটে ব্রুনো গিমারেসের হেড থেকে অল্পের জন্য দ্বিতীয় গোলটি পাওয়া হয়নি তাদের।
ম্যাচের শেষ দিকে লিড বাড়ানোর লক্ষ্যে আক্রমণের গতি অনেক বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। কয়েকবার কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত দ্বিতীয় গোলটি আর পায়নি তারা। ভিনিসিয়ুসের একমাত্র গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে ১৬ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিল আছে দুই নম্বরে। সমান ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা।
এদিকে, বলিভিয়ার কাছে ২–০ গোলে হেরে ২০২৬ বিশ্বকাপের পৌঁছানোর দৌড় থেকে ছিটকে গেল চিলি। ১৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে আছে তারা।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন