চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে ১৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৯ টাকা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও সেলটেক ইঞ্জিনিয়ার্স যৌথভাবে এই ভবন নির্মাণের কাজ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে দি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স ও সেলটেক ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের কাছ থেকে ১৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৯ টাকায় প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রথম সংশোধিত প্রকল্পটি একনেক থেকে অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর। প্যাকেজের আওতায় চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সিভিল, পাম্পিং, বৈদ্যুতিক, অগ্নিনির্বাপণ ও সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং গ্যাস সংযোগসহ ছয়তলা বিশিষ্ট একাডেমিক সার্কেল ভবন নির্মাণ হবে।
বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় হলো বাংলাদেশের ৩৭তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় এবং বিশ্বের ১২তম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। নীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) অর্জনের লক্ষ্যে মেরিটাইম বিষয়ক উচ্চতর পড়াশুনার জন্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম ‘বিশেষায়িত’ বিশ্ববিদ্যালয় এটি। পাশাপাশি এখান থেকে মেরিন ক্যাডেটদের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ‘ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সায়েন্স’ ডিগ্রি দেওয়া হয়।
২০১৩ সালে মেরিন ও মেরিটাইম সংশ্লিষ্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো স্নাতক (সম্মান) শ্রেণি চালুর অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর পল্লবীস্থ অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ধরিত্রী ও সমুদ্রবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিএসসি (অনার্স) ইন ওশানোগ্রাফির প্রথম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে থেকে চট্টগ্রামে ১০৬.৬ একর জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালে বিএসসি ইন নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড অফশোর ইন্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়। ২০১৯ সালে আরও দুইটি প্রোগ্রামের ক্লাস শুরু হয়। এলএলবি ইন মেরিটাইম ল এবং বিবিএ ইন পোর্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লজিটিক্স। ২০২০ সালে বিএসসি ইন মেরিটাইম ফিশারিজের প্রথম ব্যাচের ভর্তি এবং ক্লাস শুরু হয়।
২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি থেকে পরিবর্তন করে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি নামকরণ করে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ







