১৪৬ রানেই অলআউট আফগানিস্তান

সিপ্লাস ডেস্ক: দিনের শুরুতে বল হাতে বাংলাদেশ শিবিরে কাঁপন ধরিয়েছিলেন আফগান পেসার নিজাত মাসুদ। এরপর আফগান ব্যাটিং শিবিরে কাঁপন ধরান বাংলাদেশের দুই পেসার এবং দুই স্পিনার। পেসার শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান মিরাজের দাপটে মাত্র ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে গেছে আফগানিস্তান।

তবে আফগানদের এই ভরাডুবির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিলো পেসার এবাদত হোসেনের। একাই ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দুর্ভাগ্য তার, কয়েকটি ক্যাচ মিস না হলে ফাইফার নেয়ার গৌরবও অর্জন করে ফেলতে পারতেন তিনি। আফগানদের বাকি ৬ উইকেট সমান ভাগে ভাগ করে (২টি করে) নিয়েছেন শরিফুল, তাইজুল এবং মিরাজ।

আফগানদের ১৪৬ রানে অলআউট করে দেয়ায় প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশ এগিয়ে গেলো ২৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। চাইলে সফরকারীদের ফলোঅনও করাতে পারবে বাংলাদেশ। কী সিদ্ধান্ত নেবেন অধিনায়ক লিটন দাস?

আফগানদের হয়ে একজন ব্যাটারও ৪০-এর ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন আফসার জাজাই। ৩৫ রান করেন নাসির জামাল এবং ২৩ রান করেন করিম জানাত।

শরিফুলের বলে ইবরাহিম জাদরান আউট হতে পারতেন দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলেই। কিন্তু প্রথম স্লিপে থাকা বলটি যদি ঝাঁপিয়ে পড়ে লিটন দাস ধরার চেষ্টা না করতেন, তাহলে সেটি হয়তো নাজমুল হোসেন শান্তই তালুবন্দী করে নিতে পারতেন। লিটন চেষ্টা করে ধরতে পারেননি। শান্তও বলে হাত লাগাতে পারেননি। বেঁচে যান ইবরাহিম।

কিন্তু আফগান এই ওপেনারকে ঠিকই ফিরিয়ে দিলেন শরিফুল ইসলাম। সেই লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেই। সে সঙ্গে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাতটি হানলেন এই বাঁ-হাতি পেসার।

আফগানিস্তানের দলীয় ১৮ রানের মাথায় পড়লো প্রথম উইকেট। ১৭ বল খেলে ৬ রান করে আউট হন আফগান ওপেনার ইবরাহিম জাদরান।

এরপর আরেক ওপেনার আবদুল মালিককেও ফিরিয়ে দেন অন্য পেসার এবাদত হোসেন। ৭ম ওভারের ৫ম বলে আবদুল মালিকের ব্যাটের কোনায় লেগে বল চলে যায় তৃতীয় স্লিপে। সেখানে জাকির হাসান ক্যাচ ধরেন। যদিও রিপ্লাই দেখে থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা করেন। ২৪ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট।

১১ রানের জুটি গড়ে রহমত শাহ আউট হলেন এবাদতের বলে। তার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা কোমর সমান বলটিকে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে মিডউইকেটে তাসকিনের হাতে গিয়ে জমা পড়ে। ৯ রানে আউট হন রহমত শাহ।

৩ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় আফগানরা। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় অধিনায়ক হাশমত উল্লাহ শহিদির। দলীয় ৫১ রানে ১৬ বলে ৯ রান করে শরিফুলের বলে আউট হয়ে যান তিনি।

৩৫ রানে ৩য়, ৫১ রানে ৪র্থ উইকেট হারানোর পর আফগানিস্তানকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন নাসির জামাল এবং আফসার জাজাই জুটি। শুধু টেনে তোলাই নয়, এই জুটি ভয়ঙ্করও হয়ে উঠছিলো বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। ৬৫ রানের মোটামুটি মাঝারি মানের একটি জুটি গড়ে ফেলেন তারা।

এরপর মিডল অর্ডারে নাসির জামাল এবং আফসার জাজাইয়ের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানরা। দু’জন মিলে ৬৫ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। রানও তুলতে থাকেন দ্রুত গতিতে।

তবে, তাদেরকে খুব বাড়ত দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ এবং এবাদত হোসেন। প্রথমে জুটি ভাঙেন মিরাজ। এরপর জুটির বাকিজনকেও সাজঘরে ফিরিয়ে দেন এবাদত হোসেন।

৪ উইকেটে ১১৬ রান তুলে ফেলেছিলো আফগানরা। উইকেটেও সেট হয়ে গিয়েছিলো নাসির এবং আফসার। এরপরই ২৫তম ওভারে মিরাজের দারুণ এক ঘূর্ণি বলে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে যান নাসির জামাল। ৪৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হন তিনি।

এরপর আফগানদের একই অবস্থানে রেখে আউট হয়ে যান আফসার জাজাইও। ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই এবাদতের একটি শট বলকে খেলতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন আফসার। স্কয়ার লেগে বলটি তালুবন্দী করেন শরিফুল ইসলাম। ৪০ বলে ৩৬ রান করে আউট হন আফসার।

একের পর এক উইকেট তুলে নিচ্ছেন পেসার এবাদত হোসেন। এরই মধ্যে তার ঝুলিতে জমা পড়েছে চারটি উইকেট। তবে যে পরিমাণ ক্যাচ মিস হয়েছে, এতক্ষণে হয়তো আফগানরা অলআউট হয়ে যেতো এবং এবাদতেরও ফাইফার পূর্ণ হয়ে যেতো। তবে, সহজ সহজ ক্যাচ মিস হলেও বাঁ-হাতে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেছেন মুমিনুল হক।

Scroll to Top