১০ বছর পর মুখোমুখি বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর  

ক্রীড়া ডেস্ক: ফুটবলের ইতিহাস-ঐতিহ্যে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে সিঙ্গাপুর। আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের অভিষেক হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। তারও ২৫ বছর আগে বৈশ্বিক ফুটবলে পথচলা শুরু সিঙ্গাপুরের।

আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অভিষেক আসরেই এই সিঙ্গাপুরের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। সেটি মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে। কাজী মো. সালাউদ্দিনের গোলে বাংলাদেশ লিড নিয়েও ধরে রাখতে পারেনি, ম্যাচ শেষ হয়েছিল ১-১ গোলের সমতায়।

ওই ম্যাচের ৪২ বছর পর ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দ্বিতীয়বার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ওই ম্যাচে বাংলাদেশ লিড নিয়েও জিততে পারেনি, হেরেছিল ২-১ গোলে। দীর্ঘ ১০ বছর পর আবার মুখোমুখি দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই দেশ। তবে আন-অফিসিয়াল ম্যাচে বাংলাদেশ আরও ৩ বার খেলেছে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে।

১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপ খেলে দেশে ফেরার পথে সিঙ্গাপুরে দুটি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। দেশটির জাতীয় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছিল ১-০ গোলে। গোল করেছিলেন নওশেরুজ্জামান। যেটি বাংলাদেশ দলের প্রথম জয়। যদিও ওই ম্যাচটি টায়ার-১ ছিল কিনা সে তথ্য পাওয়া যায়নি।

ওই সফরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলেছিল সিঙ্গাপুর যুব দলের বিপক্ষে। হেরেছিল ২-০ গোলে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ‘বি’ দল পাঠানো হয়েছিল মারদেকা কাপে। ওই সময় বাংলাদেশ জাতীয় দল ছিল ভারতের দিল্লিতে নেহরু কাপ খেলতে। সেবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হেরেছিল ২-১ গোলে। এরপর ২০১৫ সালে ফিফা প্রীতি ম্যাচে সিঙ্গাপুরকে আতিথেয়তা দিয়েছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ ওই ম্যাচে বাংলাদেশ নাসির উদ্দিন চৌধুরীর গোলে শুরুতে লিড নিয়েও হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে।

দীর্ঘ ১০ বছর পর মঙ্গলবার ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭ টায় যে ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ, সেই ম্যাচ নিয়ে তোলপাড় পুরো ক্রীড়াঙ্গন। এই ম্যাচটি এশিয়ান কাপের টিকিট অর্জনের। কেবল সে কারণেই আলোচিত নয় ম্যাচটি। আলোচনার রসদ জুগিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হামজা চৌধুরী, কানাডা জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড় শামিত সোম ও ইতালির চতুর্থ বিভাগের দলে খেল ফাহামিদুল ইসলামের অন্তর্ভূক্তি।

হামজা, ফাহামিদুলের অভিষেক হয়ে গেছে। ভারত ও ভুটানের বিপক্ষে খেলেছেন হামজা। ফাহামিদুল ইসলামের অভিষেক হয়েছে ভুটানের বিপক্ষে। সবকিছু ঠিক থাকলে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অভিষেক হবে শামিত সোমের। বাংলাদেশ দলে এখন ৬ জন প্রবাসী ফুটবলার। দেশের প্রধান ফুটবল ভেন্যু ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়াম ১৬০ কোটি টাকায় নতুন করে সেজেছে। দীর্ঘ ৫৫ মাস পর এই স্টেডিয়ামে ফুটবল ফিরেছে গত ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। তবে মঙ্গলবারের সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি এখন আলোচনার তুঙ্গে।

২০২৭ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে হলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। এই গ্রুপের আগের দুই ম্যাচ ড্র হওয়া তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, ভারত ও হংকংয়ের মধ্যে। সবকিছু মিলিয়ে একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ফুটবলভক্তরা। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচকে লক্ষ্য করেছেন কোচ ক্যাবরেরা, যার প্রথমটি মঙ্গলবার।

সোমবার বাংলাদেশের টিম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ও সিঙ্গাপুরের জাপানী কোচ সুতমু ওগুরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। সিঙ্গাপুরের কোচ স্বীকার করেছেন হামজা ও শামিত যোগ হওয়ায় বাংলাদেশ দলের শক্তি বেড়েছে। দারুণ একটি উপভোগ্য ম্যাচ হবে বলেই মনে করছেন এই জাপানিজ।

এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর দুই দলই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে প্রীতি ম্যাচ জিতে। বাংলাদেশ হারিয়েছে ভুটানকে ২-০ গোলে এবং সিঙ্গাপুর হারিয়েছে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top