হোটেলে নিয়ে যৌন নির্যাতন করায় আ.লীগ নেতাকে খুন করেন যুবক

সিপ্লাস ডেস্ক: যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুল ইসলাম (২০) কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এর আগে সোমবার রাত ১১টার দিকে টেকনাফ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির চেকপোস্টের সামনে পালকি নামে একটি বাস থেকে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলামকে আটক করা হয়। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার মোহাম্মদ হাশেম মাঝির ছেলে এবং ওই এলাকার ওয়ামি একাডেমি নামে একটি মাদ্রাসার ছাত্র।

নিহত সাইফুদ্দিন কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশরের ছেলে। তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

সোমবার সকালে কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়সংলগ্ন সানমুন আবাসিক হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাইফুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাদা পাঞ্জাবি ও মাস্ক পরিহিত এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেন সাইফুদ্দিন। রাত ৮টা ১০ মিনিটের পর ওই যুবক চলে যান। এরপরই সংশ্লিষ্টরা যুবকের পরিচয় জানতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন। তাকে শনাক্ত করতে জোর তৎপরতা শুরু করে পুলিশও। পরে তাকে আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনের সঙ্গে আশরাফুল ইসলামের পরিচয় হয়। রোববার বিকেলে বড় বাজার থেকে দেশীয় মদ ও পেয়ারা কিনে কক্সবাজারের হলিডে মোড়ের হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন তারা। একপর্যায়ে দেশীয় মদ ও পেয়ারা খাইয়ে মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুলকে যৌন নির্যাতন করেন সাইফুদ্দিন। সেই ভিডিও নিজের মোবাইলে ধারণ করেন সাইফুদ্দিন। পরে মোটরসাইকেলে করে আশরাফুলকে গোলদিঘির পাড়ে নামিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, ঘণ্টাখানেক পর ফোন করে আশরাফুলকে আবারও হোটেলে ডাকেন সাইফুদ্দিন। পরে তাকে আবারও যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করা হয়। এ সময় নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ এবং পরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন আশরাফুল।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকা থেকে আশরাফুলকে আটক করে পুলিশ।

Scroll to Top