চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতী হারুন ইজহার বলেছেন, হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন দাবি করেছে হত্যার সাথে ইসকনের কোনো যোগাযোগ নাই।হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ ইসলামপন্থি বিভিন্ন দল সংগঠন এবং তাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারা বসতে চায়।
আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, এটা নতুন এক চক্রান্ত। শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটি থেকে বিদায় করার পর এ দেশের ম্যাক্সিমাম হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে।
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোকে শর্ত দিয়ে মুফতী ইজহার বলেন, এখন কোনো হিন্দু সংগঠন যদি আমাদের সঙ্গে ডায়লগে বসতে চায়, এক নম্বর শর্ত হলো— এসমস্ত হিন্দু সংগঠনগুলোকে ভারতের সঙ্গে সম্পূর্ণ এবং সকল প্রকাশ সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। দুই নম্বরটি হলো— বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের যত ভুয়া প্রপাগাণ্ডা হয়েছে সেসমস্ত ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তাদেরকে বলতে হবে বাংলাদেশে হিন্দুরা মুসলমানদের পাশাপাশি অবস্থান করে নিরাপদে রয়েছে এবং যেসকল ভারতীয় মিডিয়া অপপ্রচার চালিয়েছে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে তা মিথ্যা-ভুয়া। তিন নম্বর শর্ত হলো— আপনাদের বিভিন্ন সংগঠনে ঘাপটি মেরে থাকা যেসমস্ত জঙ্গীবাদী, সন্ত্রাসী এবং গুণ্ডারা রয়েছে সবাইকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আপনাদের তথ্যের ভিত্তিতে আপনাদের সহযোগিতায় সকলকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করতে হবে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর ওয়াসা মোড়ে জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের সামনে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ সমাবেশের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, হাজার হাজার মুসল্লি বিক্ষোভ র্যালি করেন। যেটি নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে শেষ হয়।
মুফতী হারুন ইজহার বলেন, আমি আজকের এই সমাবেশ থেকে ইসকন এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদসহ সকল হিন্দু সংগঠনকে বলে দিতে চাই আমাদের উপরোক্ত তিনটি শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আগামীতে কোনো হিন্দু সংগঠনের সাথে আলাপে বসতে রাজি নই। ২০২০ সালে আমি চট্টগ্রামের একটি হোটেলে ইসকন নেতাদের সাথে বসেছিলাম আপনাদের সকলের জানা আছে। বিগত হাসিনা সরকার পতনের পরে আমাদের দেশের ইসলামপন্থিরা হিন্দুদের মন্দির পাহারা থেকে শুরু করে তাদের আত্মরক্ষা ও সুরক্ষার সকল ব্যবস্থাপনা করেছিল। এমনকি অতি উদারতা দেখাতে গিয়ে আমাদের কিছু ভাইয়েরা তাদের পূজামণ্ডপে গিয়েছিল, যা আমরা সমর্থন করি না। এত উদারতা দেখানোর পরেও তারা আমাদের ভাইকে জবাই করে তার উত্তর দিল।
হিন্দুস্তানের সামনে দুটি পথ আছে উল্লেখ করে হারুন ইজহার বলেন, হিন্দুস্তানকে তার অতীতের অবস্থান পরিবর্তন করে আমাদের সঙ্গে ডায়ালগে বসতে হবে এবং আগামী দিনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। হিন্দুস্তান যদি তার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে, বিভিন্ন সংগঠন ও কুকুরকে লেলিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি করতে চায়, তাহলে আমরাও হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সামরিক আগ্রাসন অব্যহত রাখব। বাংলাদেশে যে ষড়যন্ত্র হছে তার মাথা চিহ্নিত করতে হবে আপনাদের। ইতিমধ্যে হিন্দুস্তানের সঙ্গে ইসরাইলের যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে ইসরাইল ও ভারত যৌথ চক্রান্ত করে যাচ্ছে। আমাদের লড়াই সূদুরপ্রসারী। বাংলাদেশের কোনো হিন্দুর গায়ে আমাদের টোকাও পড়বে না।
আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রামে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার অফিস অভিমূখে আমাদের লংমার্চ হবে। আমাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। ওই সমাবেশে আপনারা কোনো বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করবেন না। আমরা কোনো পাটকেল নিক্ষেপ করবো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ছাত্র সমন্বয়ক ও সরকারকে জানিয়ে দেব, যে আমরা ভারতীয় দূতাবাস অভিমূখে শান্তিপূর্ণ যাত্রা করব। শান্তিপূর্ণ দূরত্বে থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা তৌহিদী জনতার পক্ষ থেকে দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানান মুফতী হারুন ইজহার ।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ