চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র উত্তর চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার পর হ্যাচারিগুলোতে উৎপাদিত রেণুর আনুষ্ঠানিক বিক্রির ধুম শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সন্ধ্যা থেকে রাউজান ও হাটহাজারীর হ্যাচারিগুলোতে এই রেণু বিক্রি শুরু হয়ে চলবে সপ্তাহব্যাপী, যার কারণে হালদা পাড়ের মৎস্যজীবীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, এ বছর প্রতি কেজি রেণু সর্বনিম্ন ৮০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাউজান উপজেলায় প্রথম দিনেই ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম রেণু বিক্রি হয়েছে, যার প্রতি কেজির দাম ছিল ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
মৎস্য বিভাগ ও গবেষকদের তথ্যমতে, এবার হালদা নদী থেকে প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এই পরিমাণ ডিম থেকে প্রায় ৩৬২ কেজি রেণু উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে (প্রতি ৪০ কেজি ডিম থেকে ১ কেজি রেণু উৎপাদিত হয়)।
বিভিন্ন হ্যাচারিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৎস্য চাষীরা রেণু কেনার জন্য ভিড় করছেন। তবে কিছু ক্রেতার মতে, এ বছর ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ভালো হলেও রেণুর দাম কিছুটা বেশি। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির ঈদ এবং বন্যার কারণে বর্তমানে ক্রেতার সমাগম তুলনামূলক কম, তবে ঈদের পর বিক্রি আরও বাড়বে বলে তারা আশাবাদী। গেল বছরের তুলনায় দাম কিছুটা কম বলেও মনে করছেন বিক্রেতারা।
হালদা নদী গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার হালদা থেকে ১৪ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি রেণু ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ৪০ কেজি ডিম থেকে ১ কেজি রেণু উৎপাদন হয়। সরকারি ও বেসরকারি হ্যাচারিগুলো থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ পোনা বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ডিমের উৎপাদন কম হওয়ায় রেণুর দাম ছিল কেজি প্রতি ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তার আগের বছর, ২০২৩ সালে, প্রতি কেজি রেণু ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে তুলনায় এ বছর রেণুর দাম কিছুটা স্থিতিশীল ও ক্ষেত্রবিশেষে কম রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
হালদা পাড়ের হাটহাজারীর মদুনাঘাট, গড়দুয়ারা, মাছুয়াঘোনা এবং রাউজানের মোবারকখীল এলাকার হ্যাচারিগুলোতে মূলত এই রেণু উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রম চলছে। ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু কিনে মৎস্যচাষীরা লাভবান হওয়ায় খুশি হালদা পাড়ের মৎস্যজীবীরাও।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ