হালদা নদী ও ধুরুং খালের পাড়ের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে

ফটিকছড়ি সংবাদদাতা: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হালদা নদী ও ধুরুং খালের পাড়বর্তী জনপদে বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসতেই ভর করেছে চরম আতঙ্ক। গেল বছরের ভয়াবহ বন্যার ক্ষত এখনো শুকায়নি, এরই মধ্যে ফের নতুন বন্যার শঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে স্থানীয়রা। মূল কারণ এই অঞ্চলের নদী ও খালগুলোর ভাঙা বেড়িবাঁধ, যার পুনর্নিমাণ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।

২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় হালদা, ধুরুং ও সত্তা খালের অন্তত ৫.৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ৫১টি স্থানে ভেঙে পড়ে, ফলে লোকালয়ে বন্যার পানি ঢুকে অগণিত মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মাছের ঘের, সড়ক-সেতু সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৩৪টি স্থানে বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে।

বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সোহাগ তালুকদার জানিয়েছেন, ৫১টি ভাঙ্গনের মধ্যে ৩৪ টি মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে বাকি ১৭টি ভাঙনস্থানের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩ টি স্থানে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ১৪ টি স্থানও ধাপে ধাপে মেরামতের আওতায় আনা হবে।

তবে স্থানীয়দের দাবি, বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই সব ভাঙন মেরামতের কাজ শেষ হওয়া জরুরি। কৃষক মো. আবদুল খালেক বলেন, গতবারের বন্যায় আমার মাছের ঘের, ধানক্ষেত সব শেষ। এখনো সেই ক্ষতি সামলে উঠতে পারিনি। আবার যদি বন্যা হয়, পথে বসতে হবে।

একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য বাসিন্দারা জানান, নদীভাঙনে তারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। কারো বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে, কারো রাস্তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এ অবস্থায় তাঁরা দ্রুত বেড়িবাঁধগুলো মেরামতের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সোহাগ তালুকদার বলেন, ফটিকছড়ি উপজেলা ৯ টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা ২০২৪ বন্যায় প্লাবিত হয়। আকস্মিক বন্যার প্রভাবে ফটিকছড়িতে ৫১টি স্থানে
(৫.দশমিক ৫. ৩ ) কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে ৩৪টি (০ দশমিক ৪.১ কিলোমিটার) নদীটির ভাঙ্গন মেরামত করা হয়। ১৭ বাকি স্থানের মধ্যে ৩ টি ভাঙ্গনে ৪ টি প্যাকেজের আওতায় উক্ত ৩টি স্থানে (০. দশমিক ২.৯.০) কিলোমিটার অংশ মেরামত এর উদ্যোগ ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করা হবে। বাদ বাকি ১৪ টি স্থান আগামী অর্থ বছরে মেরামত করা হবে।

উল্লেখ্য, হালদা নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রতিবছরই বর্ষাকালে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকে। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, শুধু কৃষি নয়—জীবন-জীবিকাও মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে।

চাটগাঁ নিউজ/আনোয়ার/এমকেএন

Scroll to Top