হামুনের আঘাতে লন্ডভন্ড বসতবাড়ি, গোয়াল ঘরেই রাত যাপন

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি:  জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) পেশায় একজন দিনমজুর, নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে এক স্ত্রী, ২ কন্যা, এক ছেলে নিয়ে কোনোরকম সংসার চালিয়ে আসছিল। ঋণগ্রস্ত জাহাঙ্গীর আলম পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের লবণ মিল কারখানায় দিনমজুরি কাজ করে সংসারের হাল ধরে রেখেছে। আয় ইনকামের কোনো উপায় না থাকলেও জরাজীর্ণ একটি টিন সেটের দুইরুম ও একটি রান্না ঘরেই  তাদের সংসার চলতো। কে জানতো হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়  হামুন তার বসতবাড়িটি লন্ডভন্ড করে দিবে! বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ভয়াবহ হামুন আঘাত আনলো চারদিকে। তীব্র গতিতে ধেয়ে আসা হামুনের আঘাতে বিশালকার একটি গাছ উপড়ে পড়ে দিনমজুর জাহাঙ্গীরের বসতবাড়িতে।

ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব ইছাখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম প্রকাশ দুদু মিয়ার ছেলে।

গত (২৪ অক্টোবর) রাতে হামুনের আঘাতে বিশালকার একটি গাছ উপড়ে তার বসতবাড়িতে পড়েছে। সীমানা প্রাচীর ভেঙে গিয়ে সরাসরি গাছটি বসতঘরে পড়ায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায় বাড়িটি।

কথা হয় জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই হাফেজ মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সঙ্গে, তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে তার বড় ভাইয়ের বসতবাড়িটি ভেঙে যায়। ঐ সময় পরিবারের সদস্যরা প্রাণে রক্ষা পেলেও মাথা গোঁজার শেষ সম্বল টুকুও বিধ্বস্ত হয়ে এখন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে।

জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী জানান,তাদের শেষ সম্বল বলতে বসতবাড়িটি ছিল,সেটিও কেড়ে নিয়েছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। এখন ঠাঁই নিয়েছে গোয়াল ঘরে। পরিবারের সদস্য বেশি হওয়ায় অপরাপর স্বজনদের বাসা বাড়িতেও আশ্রয় নিতে হয়েছে। ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পরও স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুরি কাজ করতে লবণ মিলে চলে গেছে। একদিন বসে থাকলে আহার যোগাড় করতে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়তে হবে তাদের। তাই তিনি প্রতিদিনের মতো কাজে ছুটে গেছে।

স্ত্রী আরো বলেন , দুই দিন পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি, বিত্তবান ও প্রশাসনিক সহযোগিতা পাননি। দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে উপযুক্ত এক মেয়েসহ স্কুল পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী নিয়ে চরম বেকায়দায় আছেন বলে জানান স্থানীয়রা। অনুরূপ ভাবে জাহাঙ্গীর আলমের আরো এক ভাইয়ের বসতবাড়িও ভেঙে গেছে।

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জাকারিয়া জানান, হামুনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হচ্ছে, চলমান তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর নাম ঠিকানা জমা দিতে বলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, নাম ঠিকানা পেলে দ্রুত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করে জাহাঙ্গীর আলমের বসতবাড়ির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।

Scroll to Top