হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু কাল

সৌদি আরব প্রতিনিধি: ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ফরজ হজ্ব ও মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় জামায়াতে পবিত্র হজ্ব।

মঙ্গলবার (২৭ জুন ) আরাফাত দিবস হজের মূল কার্যক্রম হলেও কাল হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে।

শেষ মুহূর্তে হাজ্বীদের স্বাগত জানতে প্রস্তুত সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কার তাবুর শহর মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায়।

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার মধ্যে মিনা অবস্থিত। এখানে শুধু হজের সময় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা জড়ো হন। ইতোমধ্যে এসব স্থানের হজের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে রয়েছে।

৭ জিলহজ মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ জন্য মিনায় অবস্থিত তাঁবুগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মেরামতের কাজ দ্রুত চলছে। আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীদের জন্য আরামদায়ক ও নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে তাঁবুগুলোর এয়ার কন্ডিশনিং, ফায়ার সেফটি সিস্টেমসহ অন্য বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে তাঁবু পরিষ্কার, বর্ডার স্থাপন এবং বৈদ্যুতিক তারের পাশাপাশি প্লাম্বিংয়ের কাজ চলমান। তাঁবুর টয়লেট এবং বাথরুমগুলোও মেরামত করা হচ্ছে এবং সেখানে পানির লাইনগুলো সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাঁবু পরিষ্কার ও মেরামতের কাজ শেষ হলেই সেখানে বিছানা ও কার্পেট পৌঁছে দেওয়া হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রতিনিধিরা হজযাত্রীদের খাবারের ব্যবস্থা করবেন। যেন হজের দিনগুলোতে মুসল্লিরা এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে অবস্থান করতে পারেন।

একসময় মিনায় অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হতো। এরও আগে হজযাত্রীরা হজে আসার সময় সঙ্গে করে নিজেদের থাকার উপযোগী তাঁবু বা অন্য সরঞ্জাম নিয়ে আসতেন। ১৯৯৭ সালে মিনাতে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে ৩৫০ হজযাত্রী নিহত হন। এ ঘটনার পর সৌদি সরকার মিনায় স্থায়ীভাবে অগ্নিরোধী তাঁবু স্থাপন করে। তাঁবুগুলোতে পানি সরবরাহের পাশাপাশি অ্যালার্ম, বৈদ্যুতিক আউটলেট, রান্নাঘর, বাথরুমসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা স্থাপন করা হয়।

সাধারণত হজের দুদিন আগে মিনা এলাকার গেট খুলে দেওয়া হয়। হজের দুদিন পর আবার সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। হজের এই পাঁচ দিন ছাড়া মিনার পুরো এলাকা সারা বছর খালি পড়ে থাকে। চারপাশের গেটগুলোও তখন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানির লাইন, টেলিফোন সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

হজের নিয়ম অনুযায়ী ১০ জিলহজ হাজিরা মিনায় বড় শয়তানকে পাথর মারেন, কোরবানি দেন, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করেন তারা। প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়।

এদিকে হজযাত্রীদের উন্নতমানের সেবা দিতে ইতিমধ্যে মক্কা পৌরসভা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। এ বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে ৩০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হজ পালন করবেন।

Scroll to Top