সৌদি আরব প্রতিনিধি : হজের খুতবায় ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করেছেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শেখ মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকিলি। স্থানীয় সময় আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা এবং বাংলাদেশ সময় ৩টা ১৪ মিনিটে আরাফার ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেন তিনি। আরবিতে দেওয়া হজের মূল খুতবার সঙ্গে বাংলাসহ বিশ্বের ৫০টি ভাষায় এর অনুবাদ সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
খুতবায় শেখ মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকিলি বলেন, ‘হে মানুষ, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করো, কোরআনে বলা হয়েছে যে অন্যায় করবে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন।’
মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব বলেন, ‘ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং বিধান শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। আর যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে সে এমন জায়গা থেকে রিজিক পাবে যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা সবকিছুর মালিক। তিনি আমাদের জন্য রহমত হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যার প্রতিটি আয়াত প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ। এই কোরআন মানুষকে সরল পথ দেখায়।’
শেখ মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকিলি বলেন, ‘তাকওয়া মানুষকে সফলতা ও মুক্তি দেয়, তাকওয়া অবলম্বনকারীরা কিয়ামতের দিন দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে। সে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না। যে তাকওয়া অবলম্বন করবে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে তাকে প্রতিদান দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন। যারা নবীজি (সা.)-কে সম্মান করবে, ঈমান আনবে এবং আল্লাহ হেদায়েত স্বরূপ যে কোরআন নাজিল করেছেন তার বিধান মেনে চলবে তারাই সফল।’
অপরের হক আদায়ে ইসলামী রীতি অনুযায়ী সবাইকে ‘জাকাত’ দেওয়ার আহ্বান জানান মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব।
গত ৮ মাস ধরে নির্মমতার স্বীকার ফিলিস্তিনিদের জন্য হজের খুতবায় শেখ মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকিলি বলেন, ‘আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য দোয়া যারা পাশবিক নির্যাতনের মধ্যে আছে এবং স্বাধীকার ও খাদ্যসামগ্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিন আছে।’
মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় জামায়াতে আরাফাত ময়দানে ১৮০টি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীর লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক ধ্বনিতে অনুষ্ঠিত হল পবিত্র হজ্ব। মসজিদে নামিরাতে আরাফার খুতবার মধ্যদিয়ে শেষ হল চলতি বছরের হজ্ব।
তারপর অনুষ্ঠিত হলো এক আজান ও দুই ইকামতে একসঙ্গে দুই রাকাত করে জোহর-আসরের জামাত। যথারীতি আজ সামনের সারিতেই উপস্থিত ছিলেন সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি, যিনি দীর্ঘদিন এই মিম্বারে খুতবা দিয়েছেন। তার পাশেই উপস্থিত ছিলেন শায়খ সুদাইস।
শায়খ মাহিরের খুতবা তিনি হারামের খতিব হওয়ার প্রথম দিন থেকেই শুনে আসছি। অনুবাদ করেছি। তার খুব কম খুতবা আছে, যেটা শোনা হয়নি। এবার তাকে হজের খতিব বানানোতে অনেক খুশি হয়েছি।
তার খুতবায় আমার আলাদা মুগ্ধতা সহজবোধ্যতা এবং সিরাতভিত্তিক বক্তব্যের জন্য। আজকের খুতবাটিও ছিল যথারীতি সারগর্ভ এবং আরাফার খুতবা যেমনটি হয়ে থাকে তেমনি।
বিশেষ করে প্রথমত. তিনি যতটুক না বললেই নয়, বাদশা এবং প্রিন্সের কথা ততটুকুই বলেছেন। বক্তব্যে বা দোয়ায় কোনো বাহুল্য ছিল না। সবশেষ কয়েক বছর যা অন্যদের বিরক্ত করেছে।
দ্বিতীয়ত. তিনি খুতবায় ফিলিস্তিনের মজলুমদের জন্য শুধু নিজের দোয়াই করেননি বরং শ্রোতাদের উদ্দেশে সরাসরি অনুরোধ করেছেন তাদের বিশেষ দোয়ায় ফিলিস্তিনি মজলুমদের সবিশেষ স্মরণ করতে। তারপর তাদের জন্য খুব হৃদয়ঘনিষ্ঠ আবেগমথিত দোয়া করেছেন।
তৃতীয়ত. অতি সংক্ষেপে ও সরল ভাষায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো হজের বিবরণ এবং হাজীদের করণীয় বিশ্লেষণ।
চাটগাঁ নিউজ/খলিল/এসএ