নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটের বাকি আর মাত্র দু্ই দিন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের প্রায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার সারাদিন প্রতি ঘন্টা পরপর নানা শঙ্কা, ভয় প্রকাশ করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে সবারই একই বক্তব্য- সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। কিন্তু ভোট কারচুপির আশঙ্কায় তারা কেউ স্বস্তিতে নেই। তবে আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এ পর্যন্ত নৌকার প্রার্থীদের সংবাদ সম্মেলন করার কোন খবর পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্ট তৈরি করার সময়ই এই প্রতিবেদকের কাছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন কোন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আটক কিংবা সংঘর্ষ চলছে এমন গুজবও ছড়াতে থাকে বলে খবর আসে।
চট্টগ্রাম- ১ (মিরসরাই) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব রহমান রুহেলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণা কাজে বাধাসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বি মাহবুব রহমান রুহেল সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে আমার নির্বাচনী কাজে বাধা দিচ্ছে। আমার বিশ্বাস সুষ্ঠু ভোট হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো। কিন্তু আশঙ্কা করছি, সব কিছু স্বাভাবিক থাকবে কিনা। কারচুপি করে আমার জয় ঠেকানো হতে পারে।
এমন আশঙ্কা শুধু চট্টগ্রাম-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের নয়, ১৬ আসনের প্রায় সব স্বতন্ত্র প্রার্থী সংবাদ সম্মেলনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে আওয়ামী মনোনিত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলামের কন্যা খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে লড়ছেন তিনি। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফটিকছড়ি উপজেলার সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান এসএম আবু তৈয়ব। তিনি দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় এবং জামায়াত-শিবিরের কবল থেকে ফটিকছড়িকে মুক্ত করতে গিয়ে ত্যাগ শিকার করায় এলাকায় তাঁর একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে। কিন্তু তিনিও স্বস্তিতে নেই। তাঁর দাবি, সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন নিশ্চিত। কিন্তু ভোটে যথেষ্ট অনিয়মের আশঙ্কা করছেন বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদ্য সামশুল হক চৌধুরী। নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা কারণ ছাড়াই হামলা তার ওপর হামলা করেছেন। তিনি বলেন, আমার জনপ্রিয়তার ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোতাহেরুল। তাই নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করছে তার গুন্ডাবাহিনী।
একইভাবে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং), চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর), চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগড়া), চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ তুলেছেন। তারা প্রত্যেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তবে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ