স্বল্প দূরত্বের ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত বাতিল, ২২ কোটি টাকার ক্ষতি

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে গত ৭ দিন ধরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে গত সাত দিনে যাত্রীদের ফেরত দেওয়া টিকিটের দামসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলায় বাংলাদেশ রেলওয়ের স্থাপনা ধ্বংসে ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর রেল ভবনে রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে, এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর স্বল্প দূরত্বে সীমিত পরিসরে কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম থেকে শুধু নাজিরহাটগামী ট্রেন চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পিছিয়ে যায়।

তবে জ্বালানি তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ নিরাপত্তায় চালানো হচ্ছে তেল পরিবহনের ট্রেন। বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন ডিপো ও কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ট্রেনযোগে জ্বালানি তেল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ট্রেন না চলার কারণে টিকিট রিফান্ড করতে হচ্ছে। এটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি। এখন পর্যন্ত ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার বেশি টিকিট রিফান্ড করা হয়েছে যাত্রীদের। এ ছাড়া পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল মিলিয়ে রেলওয়ের মোট ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, সহিংসতায় হামলাকারীরা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটা কোচে আগুন দিয়েছে। এ ছাড়া সোনার বাংলা, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেসের বিভিন্ন কোচে হামলা করে ভাঙচুর করেছে। বিভিন্ন স্টেশনে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, সিগন্যাল ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ট্রেন চলাচলের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে কয়েকটি জায়গায় ট্রেনে ও স্টেশনে রাখা বিভিন্ন যন্ত্রাংশে হামলা করা হয়েছে। এই কারণে এখনো ট্রেন চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, রেলের ইঞ্জিন ও কোচের সংখ্যা কম। তারপরও রেল সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন এই মুহূর্তে ট্রেন পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করেই চলাচল করবে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা হয়েছে। রেল চাচ্ছে না যে এমন কিছু হোক— যাতে আবার আগুনের মধ্যে ঠেলে দিতে হয়। প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করবে রেল চলাচল।

রেলওয়ে পাহাড়তলীর নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তেলের ডিপোগুলোতে মজুত কমে আসায় গত মঙ্গলবার ট্রেনের ট্যাংকারে করে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়। প্রথমদিন পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলের ডিপোগুলো থেকে ৫টি ট্রেনে তেল সরবরাহ করা হয়। সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও রংপুরে তিনটি ট্রেনে তেল নিয়ে যাওয়া হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও দোহাজারীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দুটি ট্রেনে তেল নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার (২৪ জুলাই) সিলেটে ডিপো ও হাটহাজারীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দুটি ট্রেনে জ্বালানি তেল নিয়ে যাওয়া হয়।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীনে চট্টগ্রাম থেকে আন্তঃনগর ট্রেন, মেইল ট্রেন, কমিউটার ট্রেন, পণ্যবাহী ট্রেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন, চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে পাঁচটি পণ্যবাহী ট্রেনসহ ৫৭টি ট্রেন চলাচল করে। একদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলে পূর্বাঞ্চলে গড়ে ৩ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top