ঈদগাঁও প্রতিনিধি: বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান। তার নিজ জন্মভুমি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। আওয়ামীলীগের দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে তিনি সংসদ নির্বাচন করেছেন। আওয়ামীলীগের দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে ইবরাহিমের পক্ষে কাজ করেছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এই আসনে তিনি নিজের ভোটটি প্রদান করতে না পারলেও তাকে ভোট দিয়েছেন চকরিয়া-পেকুয়ার প্রায় ৮২ হাজার মানুষ ভোট দিয়েছেন। সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রায় ২৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বদ্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত জাফর আলম পেয়েছেন প্রায় ৫৩ হাজার ভোট।
চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ এতো বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করায় এই আসনের মানুষ, সাংবাদিক, সুশীল সম্প্রদায়সহ সকল জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
চকরিয়া উপজেলা সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা মো:ফখরুল ইসলাম (ইউএনও) ও পেকুয়া উপজেলা সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা থোয়াইহলা চৌধুরী (ইউএনও) জানায়, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮’ ৬৪জন। মোট কেন্দ্র রয়েছে ১৫৮টি। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কর্মকর্তা। ১৫৫ টি কেন্দ্রে ১ লাখ ১০ হাজার ১’শ ৪৭ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করেন। তার মধ্যে বাতিল হয়েছে ২হাজার ৩৬৭টি ভোট। ফলে মোট বৈধ ভোট ধরা হয় ১ লাখ ৭ হাজার ৭’শ ৮০টি।
স্থগিত করা তিন কেন্দ্র হলো চকরিয়ার চরণদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ফুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয ও মরংগোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই তিন কেন্দ্রে প্রায় ৯ হাজার ভোট রয়েছে।
আরও জানা যায়, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান তথা হাতঘড়ি প্রতিকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম পেয়েছেন ৮১ হাজার ৯’শ ৫৫ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বদ্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী তথা ট্রাক গাড়ি প্রতিকের জাফর আলম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮’শ ৯৬ ভোট। এই আসনে আরও পাঁচ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন। ফলে এই আসন ২৯ হাজার ৫৯ ভোটের ব্যবধানে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালে বহু আশা নিয়ে চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ আওয়ামীলীগের প্রার্থী জাফর আলমকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিলো। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তিনি এলাকায় কোন উন্নয়ন করেননি। তিনি নিজের আখের ঘুছিয়েছেন। নিজের কাছের লোকজনকে দিয়ে জাফরলীগ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের জমি দখল, চিংড়ি ঘের দখল, গরু চোর, ডাকাতদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এলাকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাই মানুষ জাফর আলমের বিরুদ্ধে জবাব দিয়েছে ব্যালেটের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান এবং নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, এই বিজয় জুলুমবাজের বিরুদ্ধে, দখলবাজের বিরুদ্ধে, চুরি-ডাকাতের বিরুদ্ধে। আমি ভোট দিতে না পারলেও এই এলাকার মানুষ এভাবে আমাকে ভোট দিবে কল্পনাও করতে পারিনি। তাই এই আসনের ভোটার থেকে শুরু কওে সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সকলের কাছে প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি যেসব ওয়াদা দিয়েছি তা পালন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। এলাকায় উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার সবই করবো। কোন চোর-ডাকাত, জমি, চিংড়ী ঘের দখলবাজ এবং সন্ত্রাসীদের জায়গা হবেনা।