সেন্টমার্টিনে বেড়েছে পানির উচ্চতা

সিপ্লাস ডেস্ক: দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পূর্ণিমার জোয়ার আর একটানা বৃষ্টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে পানির উচ্চতা। এই বৈরী আবহাওয়ার মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

শুক্রবার সকালে সেন্টমার্টিনের ঘাট এলাকায় বাতাসের গতিবেগ আর পানি বৃদ্ধির ফলে ভেঙে পড়েছে কয়েকটি ঘরবাড়ি।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সকাল থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। একই সঙ্গে সাগরের পানির উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়েছে। দ্বীপের ডেইল পাড়া, উত্তর পাড়া, দক্ষিণ পাড়ার শেষ প্রান্তের গলাচিপা এলাকাসহ কয়েকটি জায়গায় জোয়ারে তোড়ে ভেঙে গেছে এবং উপড়ে গেছে গাছপালা।

এ বিষয়ে সেন্টমাটিনের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ খোরশেদ জানান, ‘অন্যদিনের চেয়ে সাগরে পানির উচ্চতা ব্যাপক হারে বেড়েছে। যার ফলে তার গ্রামে দ্বীপের তীরে বসবাসকারী কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। পাশাপাশি দ্বীপের তীরে কিছু অংশে ভাঙন ধরেছে। খুব দ্রুত দ্বীপের চারপাশে বাঁধ না দিলে, দ্বীপের অস্তিত্ব থাকবে না।’

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্বাভাবিক দিনের চাইতে তিন থেকে চার-ফুট পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। কিন্তু জোয়ারের তোড়ে দ্বীপের উত্তর, পশ্চিম-পূর্বের কিছু জায়গা ভাঙছে।’

এদিকে গত রোববার সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপর প্রস্তুত করা একটি প্রতিবেদন পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পেশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে চব্বিশ বছর আগে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা এবং দেড় বছর আগে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণার পরও দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৈকত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজ কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ বিভিন্ন কোরাল প্রজাতি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে।

মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পর্যটন ছাড়াও মানুষের অতিরিক্ত চাপ, মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য আহরণ এবং প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য ফেলার কারণে দ্বীপটির জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপে বিভিন্ন সরকারি ভবন ছাড়াও প্রায় ২০০ অনুমোদনহীন ভবন রয়েছে, যা আইনত অবৈধ।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে শুধু জীব-বৈচিত্র্য নয়, পুরো দ্বীপের অস্তিত্বই হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, অনেকেই এখান থেকে পাথর তুলে থাকে। পাথর তুললে পুরো দ্বীপ এক সময় সাগরে তলিয়ে যাবে।

Scroll to Top