চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: কুষ্টিয়া শহরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদ-সংলগ্ন একটি বাসায় তিন ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ, কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ওই ভবনের ভাড়াটিয়া ও আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।
স্থানীয়রা বলেন, তিনতলা বিশিষ্ট এই ভবনের নিচতলা ফাঁকা ছিল। প্রায় দেড় মাস আগে আমাদের এই বিল্ডিংয়ের পেছনের বাসার মালিকের ছেলে বাসাটি ভাড়া নিয়ে তাদের উঠান। যে দুজন এই বসাতে থাকতেন তারা খুব বেশি চলাফেরা করতেন না। তাদের সঙ্গে আমাদের মেলামেশা ও পরিচয় ছিল না। তবে পাশের ভবনের মালিক তার আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, তারা ব্যবসা করবে এবং এখানে থাকবে। এরপর থেকেই তারা দুজন এখানে থাকতেন।
আজকে কী ঘটনা ঘটেছিল, এ প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন- ভোর ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে নিয়ে যায়। দরজা ভেঙে তারা ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা পাশের ভবনের মালিকের ছেলের সঙ্গেও কথা বলেন। আমরা জানতে পেরেছি, সুব্রত বাইন নামে একজনকে সহযোগীসহ আটক করা হয়েছে। সুব্রত বাইনের চেহারার সঙ্গে মিলও খুঁজে পেয়েছি আমরা। অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েকজন আমাদেরকে তার নামও বলেছিলেন।
জানা গেছে, সুব্রত বাইন বাংলাদেশের একজন কুখ্যাত অপরাধচক্রের নেতা। তাকে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় কমপক্ষে ৩০টি খুনের মামলা রয়েছে। ২০০৩ পর্যন্ত সুব্রত বাইন ছিলেন ঢাকার অপরাধ জগতের প্রভাবশালী চক্র সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান। ১৯৯১ সালে ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদকে হত্যার মধ্য দিয়ে নামকরা সন্ত্রাসী হিসেবে সুব্রত বাইনের অভিষেক হয়। তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, সুব্রত বাইন তাদের অন্যতম। পুলিশের হাতে আটক হওয়া এড়াতে তিনি ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পশিচমবঙ্গে তিনি ব্যবসাও গড়ে তোলেন। জমি কিনে সেখানে বাড়ি বানান।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ