চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : নিজেদের একের পর এক ভুলের খেসারত দিয়ে জয়ের প্রথম সুযোগ হাতছাড়া করেছিল বাংলাদেশ। তাদের সমান ১৯৪ রান করে ভারত ম্যাচ টাই করে ফেলে। ফলে খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে রিপন মন্ডলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পরপর দুই বলেই ভারত দুই উইকেট হারায়। ফলে আকবর আলিদের লক্ষ্য দাঁড়ায় স্রেফ ১ রান। সেই সহজ লক্ষ্য কঠিন করে তোলার পর ওয়াইডের কল্যাণে জিতে ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।
পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ অসংখ্য ভুল করেছে। ক্যাচ ও ফিল্ডিং মিসের কারণে ১৯৪ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচটি শেষ ওভার পর্যন্ত গড়ায়। যেখানে শেষ বলে ভারতের দরকার ছিল ৪ রান। তারা দুই রান নিয়ে হারের মুখে ছিল, কিন্তু আকবর আলি স্টাম্পে লাগাতে গিয়ে মিস করে বসেন। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আরেকটি রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে ভারত। সুপার ওভারেও ভুল করে বাংলাদেশ। যেখানে মাত্র ১ রানই যথেষ্ট, সেখানে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইয়াসির আলি রাব্বি। ফলে আবারও টাইয়ের শঙ্কা জাগে।
তবে এবার বাংলাদেশকে উদ্ধার করলেন ভারতীয় স্পিনার সুয়াশ শর্মা। তিনি ওয়াইড দেওয়ায় আর কোনো ভুল করতে হয়নি আকবর-জিসানদের। ভারতকে বিদায় করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। ঘণ্টাখানেক পর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ‘এ’ ও শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল। এই ম্যাচে বিজয়ী দলের সঙ্গে আগামী ২৩ নভেম্বর ফাইনালে লড়বে বাংলাদেশ।
রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কাতারের দোহায় টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খারাপ করেননি দুই টাইগার ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান ও জিসান আলম। তাদের ওপেনিং জুটিতে ৪.২ ওভারেই আসে ৪৩ রান। জিসান আউট হন ১৪ বলে ২৬ রান করে। এরপর দ্রুত আরও বেশ কিছু উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলছিলেন সোহান। তিনি ৪৬ বলে ৬৫ রান করে আউট হয়ে যান।
তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি জাওয়াদ আবরার, আকবর আলী ও আবু হায়দার রনিও। ব্যর্থ হয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও। শেষদিকে ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলের রান ১৯৪ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন মেহেরব ও ইয়াসির রাব্বি।
১৯৫ রানের বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৫৩ রান তুলে ফেলে ভারত। তারকা ব্যাটার ভৈবভ সূর্যবংশী আউট হন ১৫ বলে ৩৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে। আরেক ওপেনার প্রিয়াংশ আরিয়া ২৩ বলে ৪৪ রান করেন। যদিও ব্যর্থ হয়েছেন নামান ধীর। তিনি ১২ বলে ৭ রান করে ফিরে যান। অধিনায়ক জিতেশ শর্মার ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৩৩ রান। পঞ্চম উইকেটে দলের হাল ধরেন নেহাল ওয়াদহেরা ও রামানদীপ। তাদের পঞ্চম উইকেটে আরও ২৬ রান আসে।
শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। বোলিংয়ে ছিলেন রাকিবুল। প্রথম দুই বলে মাত্র দুই রান খরচ করেন। যদিও পরের দুই বলে দুটি বাউন্ডারি হজম করেন। চার বল শেষে ভারতের আরও নাগালে চলে আসে ম্যাচ। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল মোটে ৪ রান। এমন সময় দারুণ ব্রেকথ্রুতে ম্যাচ জমিয়ে দেন রাকিবুল। উড়ে যায় থিতু হয়ে যাওয়া আশুতোষের উইকেট।
পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ তখন আবারও বাংলাদেশের দিকে হেলে পড়ে। যদিও শেষ বলের নাটকীয়তার তখনো বাকি। হার্ষ দুবে অফ–স্টাম্পের বাইরে ইয়র্কার লেন্থের বল সরাসরি লং অনে খেললেন। ব্যাটাররা প্রথম রান নেওয়ার পরই দ্বিতীয় রানের জন্য ছুটলেন। থ্রোটা ছিল কিপার আকবর আলীর দিকে, তিনি বল ঠিকঠাক স্টাম্পে আঘাত করতে পারলেন না। বাংলাদেশের এমন বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগে ভারতীয় ব্যাটাররা তৃতীয় রানটাও নিয়ে নেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ






