ক্রীড়া ডেস্ক: মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ – ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ জমে উঠেছিল শেষের দিকে। ২১৩ রানে অলআউট হলেও দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে এসেছিল স্বাগতিকরা।
তবে শেষ বলে সোহানের ক্যাচ মিসে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে বাংলাদেশ হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ছিল ২১৪ রানের লক্ষ্য। কিন্তু শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ব্র্যান্ডন কিংকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। এরপর অ্যালিক অথানেজ (২৮) ও কিসি কার্টি (৩৫) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও দুজনকেই ফিরিয়ে দেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন।
রিশাদ আজও ছিলেন বাংলাদেশ আক্রমণের তুরুপের তাস। তার ঘূর্ণিতে একে একে ফিরে যান অথানেজ, কার্টি ও মতি। ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন বাংলাদেশকে।
অপরদিকে তানভির ইসলামও তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট; রাদারফোর্ড ও আগুইস্টেকে। অধিনায়ক শাই হোপ একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়েছেন ধৈর্যের সঙ্গে। তিনি প্রায় একাই লড়াই করে তুলে নেন ফিফটি। তার ব্যাট থেকে আসে ৬৭ বলে ৫৩ রান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন আকিল হোসেইন। তিনি যোগ করেন ১৬ বলে ১৬ রান।
এর আগে মিরপুরের স্পিনবান্ধব উইকেটে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। স্লো উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের তাণ্ডবে ২০০ রানও পার হবে কি না সেটা নিয়ে ছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত রিশাদ হোসেনের ৩ রান ও ৩ ছয়ের কল্যাণে ২১৩ রানে থামে বাংলাদেশ।
শুরুর দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে দল। ওপেনার সাইফ হাসান ১৬ বল খেলে ৬ রান করে বিদায় নেন। এরপর সৌম্য সরকার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, খেলেন ৮৯ বলে ৪৫ রানের ধীরস্থির ইনিংস। তার ব্যাটে আসে ৩টি চার ও ১টি ছয়। তবে তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি বাকিরা।
তাওহীদ হৃদয় করেন ১২ রান, নাজমুল হোসেন শান্ত ১৫ রান করে আউট হন। তরুণ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন থিতু হলেও ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি।
অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। নাসুম ২৬ বলে ১৪ রানের ছোট ইনিংস খেলে দলকে কিছুটা এগিয়ে নিলেও উইকেট হারানোর ধারা থামাতে পারেননি।
তার বিদায়ের পর মিরাজ জুটি গড়েন নুরুল হাসান সোহানের সাথে। দুজন রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা চালান। তবে উইন্ডিজ স্পিন তোপে সিঙ্গেলস ছাড়া তেমন রান যোগ করতে পারছিলেন না। সোহান ২৩ বলে ২৩ রানে বিদায় হন। তার ইনিংসে ছিল ২ রান ও ১ ছক্কা।
সোহান চলে যাওয়ার পর রিশাদ ব্যাট হাতেও তার সাবলীলতা দেখাতে থাকেন। মাত্র ১৪ বলে অপরাজিত ৩৯ রান যোগ করেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩২ রানে। ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান করে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিংয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন পুরো ৫০ ওভার স্পিনারদের খেলিয়ে। এই রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেবল উইন্ডিজ দলেরই। তাদের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন হোসেইন ও আথানেজ ও গুদাকেশ । হোসেইন নিয়েছেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট, আথানেজও পেয়েছেন ২ উইকেট। গুদাকেশের ঝুলিতে ৩ উইকেট।
সুপার ওভারে উইন্ডিজের হয়ে রাদারফোর্ড-শাই হোপ জুটি নামেন। মোস্তাফিজের প্রথম বলে ১ রান, দ্বিতীয় বলে আউট হন রাদারফোর্ড। শেষ বলের বাউন্ডারিতে সুপার ওভারে ১ উইকেটে ১০ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জবাবে, বাংলাদেশের হয়ে ১১ রানের লক্ষ্যে মাঠে নামেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। হোসেইনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সুপার ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৯ রান। ফলে ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ