সিইপিজেডে প্যাসিফিক গ্রুপের হাজারো শ্রমিকের দিনভর বিক্ষোভ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) প্যাসিফিক গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করে। পরে শিল্প পুলিশের মধ্যস্থতায় শ্রমিকরা শনিবার থেকে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ফিরে যান।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে ‘জিনস ২০০০ লিমিটেড’ নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রথমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

জানা গেছে, ওই কারখানায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সকালে কাজ শুরুর পর শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে প্রায় সব শ্রমিক একযোগে কারখানা থেকে বেরিয়ে বেপজা কার্যালয়ের সামনে চলে আসেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

আধাঘণ্টার মধ্যে প্যাসিফিক গ্রুপের মালিকানাধীন ‘ইউনিভার্সেল জিনস, প্যাসিফিক জিন্স ও এনএইচপি ফ্যাশনের শ্রমিক-কর্মচারীরাও এসে বিক্ষোভে যোগ দেন। এর মধ্যে ইপিজেড থানা থেকে পুলিশের টিম, শিল্প পুলিশ ও সেনাসদস্যরা সেখানে পৌঁছান। তারা প্রথমে শ্রমিকদের বুঝিয়ে কারখানায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

দুপুর ১টার দিকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে শিল্প পুলিশ ও বেপজা কর্তৃপক্ষ। প্যাসিফিক গ্রুপ কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে। আলোচনার পর দুপুর আড়াইটার দিকে শ্রমিকরা বেপজা কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যান।

শ্রমিকরা জানান, ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সিইপিজেডের অভ্যন্তরে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় ইপিজেড থানায় একটি মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হয়রানি শুরু করেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে তারা কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভে নামতে বাধ্য হন।

জানতে চাইলে শিল্প পুলিশের চট্টগ্রামের পুলিশের সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলা শিল্প পুলিশ তদন্ত করছে। সেটা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়। কোনো শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়নি। শুধুমাত্র তদন্তের নিয়ম অনুযায়ী, শ্রমিকদের ঠিকানা যাচাইয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। সেটাকে গ্রেফতারের চেষ্টা ভেবে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখলাম, শ্রমিকদের মধ্যেই আবার ছয়টা গ্রুপ তৈরি হয়ে গেছে। আমরা ছয় গ্রুপের মধ্য থেকে প্রতিনিধি ঠিক করি। তাদের ঐক্যবদ্ধ দাবি নিয়ে আলোচনায় বসি। তদন্তের বিষয় বুঝিয়ে বলার পর শ্রমিকরা শান্ত হয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা চলে গেছেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদ আরও জানান, বিক্ষোভের সময় বেপজা আইন অনুযায়ী প্যাসিফিক গ্রুপ কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে। তবে আগামী শনিবার থেকে যথারীতি কারখানা খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top