চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সালিস বৈঠকে মারধরের পর কীটনাশক পান করে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই সদস্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাতে সাতকানিয়া থানায় মামলাটি করা হয়।
এর আগে গত শনিবার রাতে ওই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষকের নাম মো. কামাল উদ্দিন (৩৩)। তিনি উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের উত্তর বৈতরণি এলাকার বাসিন্দা।
মামলার আসামিরা হলেন- পুরানগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মামুন রশিদ (৩৫) ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মমতাজ উদ্দিন (৫০), নিহত কামাল উদ্দিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩০) এবং মহিউদ্দিন (২৫) নামের কামাল উদ্দিনের এক স্বজন। এর মধ্যে সেলিনা আক্তারকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাতকানিয়া থানায় মামলাটি করেন নিহত কামাল উদ্দিনের ছোট ভাই মো. মহিউদ্দিন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চার-পাঁচ মাস ধরে কামাল উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী সেলিনার মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল। শনিবার এ বিষয়ে সেলিনা স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মামুন রশিদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কামালের ঘরে সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মামুন রশিদ আরেক ইউপি সদস্য মমতাজকেও নিয়ে আসেন। সালিস বৈঠক চলার সময় কামাল উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় ইউপি সদস্য মামুন কামাল উদ্দিনকে গালমন্দ করলে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কামাল উদ্দিনের বুকে লাথি ও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি দেন ইউপি সদস্য মামুনসহ তাঁর সঙ্গে আসা লোকজন। মারধরের পর কামাল উদ্দিন বসতঘর থেকে বের হয়ে দৌড়ে পাশের একটি সড়কের কাছে গিয়ে কীটনাশক পান করেন। পরিবারের সদস্যরা কামাল উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত কামালের ছোট ভাই মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ইউপি সদস্য মামুনের মারধরের অপমান সইতে না পেরে আমার ভাই আত্মহত্যা করেছেন। আমি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’
ইউপি সদস্য মামুন রশিদের বলেন, কৃষক মামুন বৈঠকে উত্তেজিত হয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। তাই তাকে বকাঝকা করা হয়েছে, কোনো মারধর করা হয়নি।
সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাক আহমদ প্রথম বলেন, সালিস বৈঠকে মারধরের অপমান সইতে না পেরে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, এমন অভিযোগে দুই ইউপি সদস্য, ওই কৃষকের স্ত্রীসহ চারজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ