চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর লবণবাহী দুটি ট্রলার দুর্ঘটনায় ৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার হাতিয়ার দক্ষিণে মেঘনা উপকূলের কাছে ও মহেশখালীর ভাঙ্গার মুখ খালে পৃথক দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রলার দুটি।শুক্রবার তাদের উদ্ধার করে খুলনা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সলিল সমাধি হওয়া চার মাঝিমাল্লার মরদেহ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পৃথক দুর্ঘটনা দুইটি ঘটেছে গত ২৮ মে বিকালে মহেশখালীর ভাঙ্গার মুখ খালে ও কুতুবদিয়া সংলগ্ন পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে।
জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে মহেশখালীর হোয়ানকের নতুন খালের ধলঘাট পাড়া এলাকার বশির আহমদ একটি কোম্পানির মালিকানাধীন কার্গো ট্রলার খাল থেকে বঙ্গোপসাগরে যাত্রা করে। ওই সময় ট্রলারটি প্রচণ্ড স্রোতের কবলে পড়ে। এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাঝি সেকাফ উদ্দিন ট্রলারটি থেকে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তিনি হোয়ানক ইউনিয়নের মোহরাকাটা গ্রামের নুরুল হোসেন মাঝির ছেলে।
প্রতিবেশী সেলিম মাঝি জানান, গত দুই দিন খোঁজাখুঁজি করার পরও নিখোঁজ সেকাফ উদ্দিন মাঝির মরদেহ পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, কুতুবদিয়া থেকে লবণবাহি একটি কার্গো ট্রলার দুর্যোগের সতর্ক সংকেত প্রচারের পূর্বে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে যায়। পরে গত বুধবার বিকেলে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরে হাতিয়ার দক্ষিণে মেঘনা উপকূলের ঠেঙ্গারচর লাল বয়া এলাকায় ডুবে যায়। ট্রলারটির থাকা ৮ মাঝিমাল্লা সাগরে নিখোঁজ হন।
সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সকালে টানা ৪০ ঘণ্টা সাগরে ভাসমান থাকা অবস্থায় খুলনা উপকূল থেকে পাঁচ মাঝিমাল্লাকে জীবিত উদ্ধার করে অন্যান্য ফিশিং ট্রলার। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের খবর নিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক কুতুবদিয়ার একটি ছাত্র সংগঠন ‘দ্বীপবর্তিকা’র সভাপতি রোবাইত হোসাইন রাকিব এবং প্রচার সম্পাদক মোস্তাকিম সাদিকের নেতৃত্বে একটি দল খুলনা হাসপাতালে যায়। তারা জানান, গতকাল শুক্রবার নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে আহত ৫ জনের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। উদ্ধারকৃত পাঁচজনের মধ্যে মুবিন নামে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে আইসিইউতে চিকিৎিসা দেওয়া হচ্ছে। তবে বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আহত মাঝিমাল্লারা জানান, গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের লবণবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। প্রায় ৪০ ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর, গতকাল শুক্রবার ভোরে তারা নোয়াখালীর চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় স্থানীয়দের দ্বারা উদ্ধার হন।
তারা আরও জানান, নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে দুইজন তাদের চোখের সামনেই মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরও সহকর্মীরা এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও মোরশেদ নামে এক মাঝি প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে ভেসে যান এবং পরে তার আর খোঁজ মেলেনি বলেও জানান তারা।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন