সাগরে ড্রোন উড়িয়ে খোঁজা হচ্ছে নিখোঁজ চবি শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানকে

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: টানা পাঁচদিন পার হলেও খোঁজ মেলেনি কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে নিখোঁজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের।

শনিবার (১২ জুলাই)সকাল থেকে কক্সবাজার উপকূলে ড্রোন উড়িয়ে ওই শিক্ষার্থীর অনুসন্ধান করছে বিমান বাহিনী।

নিখোঁজ অরিত্র হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র। গত মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকত এলাকায় গোসল করতে নেমে আরও দুই বন্ধুসহ সাগরে ভেসে যান। পরে দুই বন্ধুর মরদেহ একে একে ভেসে এলেও অরিত্র হাসানকে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ড্রোন দিয়ে অনুসন্ধান অভিযান চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।

তিনি বলেন, আমরা উদ্ধারকাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। শনিবার থেকে ড্রোন দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সাগরে নিখোঁজ অরিত্র হাসানের সন্ধানে জেলা প্রশাসনের বহুমাত্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত আছে। জেলা প্রশাসনের বীচকর্মী ও লাইফগার্ডের স্পিডবোট প্যাট্রল সম্ভাব্য সকল স্থানে অনুসন্ধান করছে। বিশেষ করে মহেশখালী ও সোনাদিয়া সংলগ্ন সব স্থানে খোঁজ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বিত টিম নজরদারি করছে। স্থানীয় জেলে ও নৌযানের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নৌপুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অরিত্র হাসানের পরিবারের সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে সহপাঠী কে এম সাদমান রহমান ও আসিফ আহমেদকে নিয়ে হিমছড়ি এলাকায় সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নামেন অরিত্র হাসান। এ সময় সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে তিনজনই ভেসে যান। দুই ঘণ্টা পর হিমছড়ি সৈকতেই কে এম সাদমান রহমানের লাশ ভেসে আসে। পরদিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলের প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরারটেক সৈকতে পাওয়া যায় আসিফ আহমেদের লাশ।

উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি সেফ লাইফগার্ডের আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, শুক্রবার সারাদিন উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা ও নদীর মোহনায় খোঁজ করা হয়েছে, কিন্তু কোথাও নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, অরিত্র হাসানের বাড়ি বগুড়া জেলায়। তার বাবা সাকিব হাসান জাতীয় একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। ছেলে নিখোঁজ হয়েছে জানার পর থেকেই স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অবস্থান করছেন। ছেলের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ক্ষণে ক্ষণে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন দুজনেই।

সাকিব হাসান বলেন, সোমবার পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার যাওয়ার কথা জানিয়েছিল অরিত্র। আমি যেতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু পরদিন সকালে ফোনে জানানো হয়, সে নিখোঁজ। এরপর থেকে আমরা কক্সবাজারেই আছি। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করছি।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top