সাগরের গর্ভে কবরস্থান, হুমকিতে শতবর্ষ পুরোনো মসজিদ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা উপকূলের উঠান মাঝির ঘাট এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক আগেই সাগরের তলিয়ে গেছে শতবর্ষ পুরোনো একটি কবরস্থান। এবার ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে আটকে পড়া কয়লাবাহী দুটি জাহাজের ধাক্কায় হুমকিতে পড়েছে ঐতিহাসিক একটি মসজিদ, মাদ্রাসা ও আশপাশের বসতি।

স্রোতের তীব্রতায় ছিঁড়ে গেছে রক্ষামূলক জিও ব্যাগ। টানা বৃষ্টি ও সাগরের জোয়ারের পানির ধাক্কায় কবরস্থান ভেঙে উঠে এসেছে পুরোনো লাশের কঙ্কাল, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

বর্তমানে গহিরা উপকূলের এক কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, অতিদ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মসজিদ, এতিমখানা ও কবরস্থান সবকিছুই সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।

সরেজমিন দেখা যায়, কয়লাবাহী ‘মারমেইড-৩’ বার্জ এবং ‘নাভিমার-৩’ টাগবোট দুটি মসজিদের ঠিক পাশেই অবস্থান করছে। জোয়ারের ঢেউয়ে মসজিদের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের জিও ব্যাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতবর্ষ পুরোনো কবরস্থান থেকে ভেসে উঠেছে মানুষের কঙ্কাল, যা পরে পার্শ্ববর্তী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও জাহাজ দুটি সরাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কোস্টগার্ড ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে জাহাজ দুটির পাহারার দায়িত্বে রয়েছে।

উঠান মাঝির ঘাট গাউছিয়া হিজিরিয়া তাহফিজুল কোরআন হেফজখানা ও এতিমখানার পরিচালক আজগর আলী বলেন, “১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়েও মসজিদ ও কবরস্থান অক্ষত ছিল। কিন্তু এবার জাহাজের কারণে সেগুলো বিলীনের পথে।”

মসজিদ কমিটির সিনিয়র সদস্য নুরুল আলম বলেন, “জাহাজ দুটি আটকে থাকার এক মাস পার হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দ্রুত সরানো না হলে ইতিহাসের সাক্ষী এই স্থাপনাগুলো হারিয়ে যাবে।”

চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ জানান, “জাহাজ দুটি সরাসরি মসজিদ, কবরস্থান ও বেড়িবাঁধের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিও ব্যাগ দিয়ে তা রক্ষা করার চেষ্টা চলছে। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে বারবার জাহাজ সরানোর অনুরোধ করেছি।”

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top