চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বেশ কিছু সংবাদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বুধবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
যেখানে শুরুতেই এই তারকা লিখেছেন, “আমার অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়ে এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত কিছু সংবাদ দেখে আমি বিরক্ত। আমি সাধারনত নির্দিষ্ট কয়েকজন মানসম্পন্ন সাংবাদিক ব্যতীত অন্য সাংবাদিকদের সাথে কোন ধরনের আলাপচারিতায় যেতে চাই না, কারন তারা আমার সাক্ষাৎকার কিংবা কথোপকথন থেকে নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা এবং তথ্যবিকৃতি করে সংবাদ উপস্থাপন করে মূলত বাড়তি বাজার কাটতির জন্য, সাথে রয়েছে চটকদার শিরোনাম”।
সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ তুলে ধরে ফারিয়া লিখেছেন, “গত শনিবারে একজন সাংবাদিক আমাকে ফোন করেন, আমি বলি ‘মোবারকনামা’ ছাড়া আমি অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলতে উৎসাহী না এই মুহূর্তে। কথার এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন নাটকে কেন কাজ করছি না? জবাবে আমি জানাই ‘যেসব কাজ আসছে আমার কাছে, যেসব নামে কাজ আসছে আমি সেসব নাটকে কাজ করতে চাই না। আমি যে ধরনের কাজ করতে চাই, ঠিক সেই ধরনের স্ক্রিপ্ট আসছে না, বিষয়টা এমন যে কাজ করতে চাই না।”
সম্প্রতি বিরতির পর কাজে ফিরেছেন জানিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, “সম্প্রতি একটা লম্বা বিরতির পর আমার অভিনীত একটি ওয়েবসিরিজ এসেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ, নতুন এই কাজের প্রমোশনের জন্য আমি খুব স্বল্প পরিসরে ইন্টারভিউ দিয়েছি, এমনকি হইচই থেকে নির্ধারিত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানেও আমি যোগ দেইনি এই ভেবে যে, আমি যাই বলি, তারা যা ইচ্ছা তা শিরোনাম দিয়ে সংবাদ করে, যা আমার ও আমার পরিবারের জন্য বিব্রতকর! বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্তটা, যদিও এটি আমার পক্ষ থেকে কিঞ্চিৎ অপেশাদার আচরণ ছিল, তবুও আমি হইচই এর কাছে কৃতজ্ঞ তারা আমার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে”।
ফারিয়া আরো লিখেছেন, “এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বর্তমানে আমি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করছি, যা একদম শেষের দিকে, গত দুইবছর স্নাতকোত্তর ঠিকভাবে করার জন্যই কিন্তু আমি কাজ থেকে বিরতি নিয়েছিলাম। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে আমি দুইটা ওয়েব ফিল্ম, একটা ওয়েব সিরিজ, দুই বা তিনটি ওভিসি ও বিজ্ঞাপন করেছি। প্রথমদিকে আমি ‘মা বাবা ভাই বোন’ নামের একটা ধারাবাহিকে কাজ করতাম, কিন্তু শুটিং বা পড়াশুনা একসাথে করতে না পেরে শেষের দিকে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এ কাজটা শেষ হওয়ার পর সিদ্ধান্তে আসি, আমি সবকিছু মিলিয়ে এত চাপ আর নিবো না! যেহেতু আবার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শুরু করেছি, তা ঠিকঠাক ভাবে শেষ করেই তারপর কাজে ফিরবো। যেহেতু এখন প্রতিদিন শুটিং করি না আগের মতো অবশ্যই আমার আয় আগের মতো না, অবশ্যই আমাকে আমার সেভিংস থেকেও অনেক সময় খরচ করতে হয়, সেইটা স্বাভাবিক একটা ঘটনা! মানুষ তো টাকা জমায় প্রয়োজনেই। এটা একটা সংবাদ কিভাবে হতে পারে? আমি সংসার চালাই, এই তথ্য সাংবাদিকরা কোথায় পেলেন”?
এ ধরনের সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে এই অভিনেত্রী লেখেন, “আমি সিঙ্গেল, আমার কোনো সংসার নাই, পরিবার বলতে আমি আর আমার মা। আমার মা তার নিজ বাড়িতে থাকেন, আমার বাবা একজন চিকিৎসক এবং প্রথমশ্রেণীর উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। আল্লাহতালার রহমতে আমার পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা এমন যে সম্ভবত আমি আর কখনো আয় না করলেও কখনো অর্থনৈতিক কোনো সমস্যার সম্মুখীন আমাকে হতে হবে না। সেইটাও মূল কথা না। শুধু মাত্র একটা ক্লিকের জন্য বিব্রতকর শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের একটি ট্রেন্ড চালু হয়েছে, আমি তার প্রতিবাদ জানাই”।