সবজির সরবরাহ বাড়লেও, তবুও মিলছে না স্বস্তি

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মুলার পাশাপাশি বাজারে বেগুন, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙা ও করলার পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু এত বাহারি সবজি থাকার পরও দাম আগের মতোই বেশ চড়া। ফলে স্বস্তি মিলছে না ক্রেতাদের।

বিক্রেতাদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে সবজির দাম বাড়তি থাকলেও সপ্তাহ ধরে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকটি সবজির বর্তমানে মৌসুম না হওয়ায় সেগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) নগরের কাজীর দেউড়ি, বকশির হাট, চকবাজার, বহদ্দারহাট, রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢেঁড়স, বেগুন, করলা, পটল, লাউ, টমেটো ও ধনেপাতার দাম বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে বরবটি, কাঁকরোল, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে ও শসার দাম।

এসব বাজারে গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া করলা ১০০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, লাউ ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা ও ধনেপাতা ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৩০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের বাজারে তেমন দেখা মিলেনি। শিমের পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের অন্যতম সবজি পাতা ও ফুলকপি। ছোট আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা পিস, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। আজকের বাজারে পাতাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৬০ টাকা।

এছাড়া পেঁপে ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা, কাঁকরোলে ১০ টাকা কমে ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১০ টাকা কমে ৫০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা কমে ১০০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৯০-২০০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২০ টাকার নিচে মিলছে না শাকের আঁটি। পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১২০-১২৫ টাকা, রসুন ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

রফিক উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, দুয়েকটি সবজি বাদে সব সবজির দাম ৫০-৬০ টাকার ওপরে। সবজির এত দাম হলে স্বস্তি মেলে কী করে? আমরা তো ভেবেছিলাম নতুন সরকার ঠিকঠাকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না। বাজার এখনও সিন্ডিকেটের দখলেই রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সবজিতে বাজার ভরপুর। অথচ দামের বেলায় মনে হয় এগুলো বিরল প্রজাতির সবজি। দু-তিন রকম সবজি কিনলেই এক-দেড়শো টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস বাদ দিয়ে সবজি কিনে খাবো তারও উপায় নেই। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ খুব কষ্টে আছে।

এদিকে সবজির দাম প্রসঙ্গে বকশির হাটের সবজি বিক্রেতা জেবল হোসেন বলেন, বন্যায় সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়েছে। এই সপ্তাহে সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তাছাড়া যেগুলো নতুন এসেছে সেগুলোর দাম একটু বেশি। আজকের বাজারে শিম বিক্রি করছি ২০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে শিম ছিলই না। শিমসহ ২/৪ আইটেমের সবজির বর্তমানে মৌসুম না হওয়ায় কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার নতুন করে এসব সবজি উঠতে শুরু করলে এগুলোরও দাম কমে যাবে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে মীরসরাই, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন উপজেলার মৎস্যচাষের পুকুর, দিঘী ও হ্যাচারির মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে ২৯০ কোটি টাকা। ৫ হাজার ৫৪১ হেক্টর জমির ১৬ হাজার ৮৬৪টি মাছ চাষের পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১৬ হাজার ৫৯৫ টন মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি ১৪ লাখ বিভিন্ন মাছের পোনা এবং ২ লাখ চিংড়ি পোনা ভেসে গিয়ে মৎস্য খাতের বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।

এ কারণে মাছের দাম কমছে না। রিয়াজউদ্দিন বাজার মাছের দোকানে কাতলা ৩৪০-৪০০ টাকা, রুই ২৮০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৬০ টাকা, পাঙাস ১৮০-২২০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কৈ ৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৫০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১১শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top