চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের রাউজানে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর এবার জড়িতদের নামও প্রকাশ পেয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে এলাকাবাসি।
আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকালে রাউজানের নোয়াপাড়ার পথেরহাট এলাকায় এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। যেখানে শত শত এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে স্থানীয়দের দাবি— বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হকের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাদাবাঁজ মামুন, ফরিদ, তৈয়ব, টেম্পো আলমগীর, বাইট্টা খোকন, বেতাগীর ইসমাইল, জালাল, জামালসহ ২৫-৩০ জনের একটি দল যারা নোয়াপাড়াকে অস্থিতিশীল করে রেখেছে।
মানববন্ধনে হাজী জসিম নামে একজন অভিযোগ করে বলেন— হত্যাকাণ্ডের ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ ইতোমধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে পৌঁছেছে।
মানববন্ধনে আরেক বক্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সবাই বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি। অদৃশ্য শক্তির ঈশারা ও নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদেরকে আটকে পুলিশ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে।
অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন অংশগ্রহণকারীরা কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান। সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়িক কাজে দীর্ঘ ১৭ দিন মায়ানমার ও মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে আসেন শুঁটকি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। দেশে এসে তিনি গত ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) নগরীর চান্দগাঁওয়ের বাসা থেকে মোটরসাইকেল যোগে ভাগিনা আব্বাস উদ্দিনসহ নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিষ পাড়া গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের কবর জেয়ারত ও জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশে বের হন।
যাবার পথে বাড়ির অদূরে আসাদ আলী মাতব্বর পাড়া জামে মসজিদের সন্নিকটে পৌঁছালে সশস্ত্র সন্ত্রসীরা তাদের গতিপথ রোধ করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে তারা দুইজনই গুলিবিদ্ধ হন। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে মুসল্লিরা তাদের উদ্ধার করে নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ আব্বাস উদ্দিন বর্তমানে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম এলাকার মৃত আবু ছৈয়দ মেম্বারের ১ম ছেলে। তিনি নগরীর চাক্তাইয়ের একজন প্রতিষ্ঠিত শুঁটকি ব্যবসায়ী। এছাড়া নোয়াপাড়ায় তার বড় ছেলের নামে মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টার নামে একটি পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি এলাকায় দ্বীনদার, দানবীর হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীদের মতে, তিনি কোন রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন না।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি /জেএইচ