চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদ এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্সের ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিনসহ গেলো ২৮ অক্টোবর এ অভিযোগ দায়ের করেন।
শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত এবং মূল সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করেছেন আইনজীবী।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে এ বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ করে। আন্দোলনে পুলিশের হাতে আবু সাঈদ নিহত হন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নৃশংসভাবে দমন-পীড়ন চালানো হয়।
ওই সময় বাংলাদেশের সরকার আন্দোলন দমনে পুলিশ, র্যাব ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও যুব সংগঠন যুবলীগকে মাঠে নামায়। তারা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, লাইভ বুলেট ব্যবহার করে। এতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হয় বলে জানা গেছে।
গণহত্যার পাশাপাশি গুলিতে অন্তত ৯২ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং শতশত মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, এসব গুরুতর অপরাধের নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনা প্রশাসনের সময় নিয়োগকৃত আইন প্রয়োগকারী ও সরকারি কর্মকর্তাদের কারণে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ আছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংসদ নির্বাচনের পর থাকবে না এবং তখন নতুন রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ন্যায়বিচারের সঙ্গে আপস করতে পারে। এছাড়া, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরানোর বিষয়টি অনিশ্চিত।
এ অবস্থায় রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা ও সংশ্লিষ্টদের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যার সঙ্গে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং ভিডিও প্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে বলে থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্সের আইনজীবীরা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
সূত্র- ডেইলি স্টার
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ