নিজস্ব প্রতিবেদক : দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এই রমজানে ইফতারে খেজুর না থাকলে ইফতারির টেবিলে যেন পূর্ণতা আসে না। খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকরও। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। রোজার সময় ইফতারে খেজুর রাখা ভালো। রমজান এলে খেজুরের কদর বেড়ে যায়। ফলে খেজুরের চাহিদার কারণে বেড়ে যায় খেজুরের দামও।
তবে গত দুই বছর রমজানের শুরুতে খেজুরের বাজারে অস্থিরতা থাকলেও এবার আগেভাগেই শুল্কহার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। শুল্কহার কমানোর সুযোগে অন্যান্য বছরে তুলনায় এ বছর জানুয়ারি মাসেই ৫১৯ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি করা হয়েছে।
গতমাসে সরকার আজোয়া, মরিয়ম, মেডজুল, মাবরুম এবং আম্বার খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে ৩.৭৫ মার্কিন ডলার, আলজেরিয়া-তিউনিসিয়ান খেজুরে ২.৩০ মার্কিন ডলার, ইরাকের খেজুরে ১ মার্কিন ডলার শুল্কহার নির্ধারণ করে দেয়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোয়ালিটি ভেদে প্রতি ৫ কেজি প্যাকেটের আজোয়া খেজুরের দাম ৩৫০০ থেকে ৪৮০০, সাফাবি ২৬০০ থেকে ৩০০০,মরিয়ম প্রিমিয়াম ৪৬০০ থেকে ৭০০০, মেডজুল ৪০০০ থেকে ৪৮০০, জায়েদি ১০ কেজির প্যাকেট ১৬৮০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্কহার কমানোর ফলে আমদানি বেড়েছে। রেকর্ড আমদানি হওয়ায় পাইকারি বাজারে কমেছে খেজুরের দাম। তবে খুচরা বাজারে এখনো বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে ফলটি। তবে ব্যবসায়ীদের আশা, এবার রোজায় খুব বেশি বাড়বে না ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গটির দাম। তারা বলছেন, রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এবার যথেষ্ট খেজুরের মজুদ রয়েছে। তাই রোজায় দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম। তবে ক্রেতাদের কেউ কেউ বলছেন, ইতিমধ্যে খেজুরের দাম যেখানে গিয়ে ঠেকেছে, সেটাই অনেকের জন্য অনেক বেশি।
এদিকে, সরকার খেজুরের আমদানি শুল্ক কমালেও ট্যারিফ নিয়ে আপত্তি রয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের, যার কারণে খেজুরের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে না বলে অভিযোগ ওঠছে। বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানিয়েছেন, সরকার যে হারে শুল্ক কমিয়েছে সে অনুযায়ী দাম কমেনি খেজুরের।
জানা গেছে, অন্যান্য খেজুরের তুলনায় আজোয়া খেজুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে আসল আজওয়া খেজুর চেনার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, আজওয়া খেজুর নরম ও অনেক সুস্বাদু হয়। আকারে ছোট ও উপরে সাদা রেখা দেখা যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোই আপনাকে সঠিক আজওয়া খেজুর বাছাই করতে সাহায্য করবে।
খুচরা বিক্রেতা জানিয়েছেন, বাজারে দাম অনুযায়ী কম দামি খেজুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সাধারণ ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা কম দামি খেজুরের প্রতি আগ্রহ থাকে।
বাংলাদেশের বছরে প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা থাকে। এর মধ্যে শুধু রমজান মাসে ইফতারের উল্লেখযোগ্য উপাদান হিসেবে খেজুরের চাহিদা প্রায় ৪০ তে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।
চাটগাঁ নিউজ/ইমা/এমকেএন/এসএ