চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে রাজস্ব আদায়ে অনন্য এক রেকর্ড স্থাপন করেছে। এবারের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিমানবন্দরটির আয় দাঁড়িয়েছে ২৭০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পেছনে যাদের অবদান, তাদের হয়রানি করা ও লাগেজ কাটার মতো বিষয়গুলো এখনও বিদ্যমান। ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শাহ আমানত বিমানবন্দরের মান এখনও তলানিতে।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শাহ আমানত বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিল রাজস্ব আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শাহ আমানত বিমানবন্দরে এবার রেকর্ড রাজস্ব আয় হয়েছে। বলা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে রেকর্ড রাজস্ব আয় হয়েছে। মূলত যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি, বকেয়া আদায়সহ নানা খাত থেকে এবার সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় হয়েছে। একইসঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে যাত্রী যাতায়াতও বেড়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২৩৭ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছিল ৩৬ কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২২৫ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছিল ৩৩ কোটি টাকা। আর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৭৯ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছিল ২৭ কোটি টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আয় হয়েছিল মাত্র ৩০ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছিল ২৬ কোটি টাকা।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০০০ সালে জাপানি দাতা সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক রূপ পায় শাহ আমানত বিমানবন্দর। নতুন করে অ্যাপ্রোন এরিয়া তৈরি করায় বিমান ধারণক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০টিরও বেশি। সেইসঙ্গে বছর বছর বেড়েছে যাত্রী পরিবহন। গত অর্থবছরের তুলনামূলক এবার যাত্রী পরিবহন বেড়েছে। সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীও বেড়েছে।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ— বছর বছর শাহ আমানত বিমানবন্দরের আয় বাড়লেও তাদের সেবার মান এখনও তলানিতে। যাত্রী হয়রানি, লাগেজ কেটে মালামাল চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায়নি।
সম্প্রতি দুবাই ফেরত মিজানুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী প্রবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে চাটগাঁ নিউজকে বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে আমি দুবাই থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে ল্যান্ড করি। আমি কার্টন ভর্তি কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী এনেছিলাম। রিসিভ করার পরে দেখি কার্টনের একপাশ কাটা। সে অংশে থাকা বেশকিছু সামগ্রী তারা চুরি করে নিয়ে নেয়। অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
বিষয়টি জানতে চাইলে শাহ আমানত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. তারেক জিয়া উদ্দিন চাটগাঁ নিউজকে বলেন, এটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের বিষয়। তবুও আমরা এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ