চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলী বর্বরতার প্রতিবাদে লোহিত সাগরের বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা জোরদার করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। যার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য। বেড়ে যাচ্ছে পণ্যের দাম। গাজায় আক্রমণ বন্ধ না হলে তারা লোহিত সাগরে হামলা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে।
ইরান সমর্থিত হুথিদের হামলার কারণে বৈশ্বিক শিপাররা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে ভিন্ন পথে চালানোর উদ্যোগ নেওয়ায় ফলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি শঙ্কা দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতিরও।
সুইডিশ বৃহত্তম ফার্নিচার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আইকেইএ চলতি সপ্তাহে ঘোষণা করেছে, তারা তাদের পণ্যগুলোর প্রাপ্যতা সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বিকল্প রাস্তা খুঁজছে। তাদের পণ্যগুলো মূলত লোহিত সাগর ও সুয়েজ খালের মাধ্যমে এশিয়ান কারখানা থেকে পশ্চিমা বাজারে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
ইন্টার আইকেইএ গ্রুপের মুখপাত্র অস্কার লজুংগ্রেন ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘সুয়েজ খালের পরিস্থিতির জন্য আমাদের পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বিলম্ব হতে পারে। এছাড়াও কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের সরবরাহ সীমিত হতে পারে।’
ইতিমধ্যে অ্যাবারক্রম্বি অ্যান্ড ফিচ প্রতিষ্ঠানটি তাদের পণ্য সমুদ্র পথের পরিবর্তে আকাশ পথে পরিবহন করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সাপ্লাইয়ারদের কাছে ইমেলও পাঠিয়ে রেখেছে।
এ সপ্তাহের শুরুতে ডেনিশ শিপিং গ্রুপ মারস্ক বলেছিল, লোহিত সাগরে হামলার উচ্চ ঝুঁকির কারণে তারা আফ্রিকার পাশ দিয়ে কেপ অব গুড হোপ বা উত্তামাশা অন্তরীপের মাধ্যমে তাদের মালবাহী জাহাজগুলো চলাচলের পরিকল্পনা করেছে। এশিয়া-ইউরোপ পথে পরিবহন ২৫ শতাংশ কমিয়েছে।
জার্মান পরিবহন সংস্থা হ্যাপাগ-লয়েডও একই পথে হাঁটছে। তবে আফ্রিকার আশপাশ দিয়ে মালবাহী জাহাজ পাঠানো হলে যাত্রা পথের সময় প্রায় আড়াই সপ্তাহ বেড়ে যাওয়ার ফলে শিপিং সক্ষমতা কমবে ও খরচ বাড়বে।
সুয়েজ খাল বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট। এই পথে বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ কন্টেইনার বাণিজ্যসহ শিপিং কার্যকলাপের প্রায় ১৫ শতাংশ পরিচালিত হয়। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি লোহিত সাগরের জাহাজে যে পরিমাণ হামলা হচ্ছে তাতে শিপিং বাণিজ্যে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সুয়েজ খালে ছয়দিনের জন্য বৃহত্তম একটি কন্টেইনার বাহী জাহাজ অবরুদ্ধ হয়েছিল, যার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে দৈনিক ক্ষতি হয়েছিল ৯.৬ বিলিয়ন ডলার।