লোহাগাড়ায় ইজিপিপি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদেস্যের বিরুদ্ধে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। এ প্রকল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের পারিশ্রমের টাকা ফেরত চেয়ে হুমকি-ধমকি ও হয়রানির অভিযোগ করেছেন দুই নারী শ্রমিক।

বুধবার (৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মোতালেব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী দুই নারী শ্রমিক। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- চরম্বা ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন (৫০), ১ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ছৈয়দ হোসেন (৪৮) ও কুতুব উদ্দিন (৩৫)।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৪০ দিন কর্মসূচির শ্রমিক হিসেবে কাজার করার কথা বলে শ্রমিকদের এনআইডি দিয়ে একটি করে সিম রেজিস্ট্রেশন করে রকেট একাউন্ট খুলে দেন ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ছৈয়দ হোসেন। এরপর তারা সিমগুলো তাদের কাছে রেখে দেন। তবে শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও কাজ না দেওয়ায় তারা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করতে উদ্যত হয়।

দুই নারী শ্রমিক জানান, তাদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমগুলো ফেরত না পেয়ে পরবর্তিতে সিমগুলো পুনরায় উত্তোলন করার পর একাউন্টে ১৬ হাজার টাকা করে ব্যালেন্স দেখতে পান। পরে নগরীর মুরাদপুরে রকেট অফিসে গিয়ে পিন পরিবর্তন করে দু’জনের মোট ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এরপর চেয়ারম্যান দফায় দফায় চকিদার এবং দফাদার পাঠিয়ে টাকাগুলো ফেরত দিতে বলেন। নইলে রাস্তায় কাজ করতে বলা হয়। তবে তারা কাজ চাইলে আগে টাকা ফেরত দিতে চাপ দেন।

স্থানীয়রা জানান, এই প্রকল্পের অধীনে যত জন শ্রমিক নেওয়ার নির্দেশনা আছে তাঁর চেয়ে কম শ্রমিক নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। অধিকাংশ শ্রমিকের নামে ভুয়া সিম ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন রেগে গিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোন বক্তব্য দিবো না। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সব জানেন। তিনি অভ্যন্তরীণ বিষয়ের অজুহাত দিয়ে সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন অন্য কক্ষের রেখে তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

ইউপি সদস্য ছৈয়দ হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের আওতাধীন সকলে কাজ করেছে। কাজ করে না তেমন কেউ নেই, আমি কারো কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম শাওন ভূঞার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইনামুল হাছান বলেন, আমার কাছে দুইজন মহিলা অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top