চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের জন্য টাইগারপাসে কাটা হবে শতবর্ষী শতাধিক গাছ। ইতোমধ্যে টাইগারপাস থেকে কদমতলীমুখী গাছগুলো কাটার জন্য সাদা ও লাল রং দিয়ে করা হয়েছে মার্কিং। তবে গাছ কাটতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না দিলেও বনবিভাগের থেকে মিলেছে অনুমোদন।
টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত সড়কটি নগরবাসীর কাছে ‘দ্বিতল’ সড়ক হিসেবে পরিচিত। সবুজে ঘেরা অনন্য এই সড়কের একটি অংশ গেছে পাহাড় ঘেঁষে উপর দিয়ে। আরেকটি অংশ নিচে। মধ্যবর্তী পাহাড়ি ঢালে রয়েছে ছোট–বড় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এসব গাছে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির বাসা। এখন র্যাম্প নির্মাণের জন্য গাছ কাটলে সড়কটি হারাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
মাটি পরীক্ষার পর র্যাম্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের আগেই এসব গাছ কেটে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এই প্রকল্পে ৪৬টি গাছ কাটা পড়বে। এগুলো না কেটে র্যাম্প নির্মাণের সুযোগ নেই।
তবে এর বিপরীতে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, র্যাম্পটি রাস্তার মাঝের জায়গায় নির্মাণ না করে নিচের রাস্তার বাম পাশে নির্মাণ করলে গাছগুলো রক্ষা পায়। এতে র্যাম্পের ডিজাইনে সামান্য পরিবর্তন আনতে হবে। শতবর্ষীসহ শতাধিক গাছ রক্ষা করার জন্য ডিজাইনে পরিবর্তন আনা কঠিন কাজ নয়। শুধুমাত্র একটি গাছ রক্ষার জন্য শত কোটি টাকার প্রজেক্টের ডিজাইন পাল্টানোর অনেক নজির পৃথিবীতে রয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চট্টগ্রামের প্রথম এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত এক্সপ্রেসওয়ের কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ১৫টি র্যাম্প নির্মাণের কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যে জিইসি মোড়ে র্যাম্প নির্মাণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে টাইগারপাসে র্যাম্প নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট চলছে। এই র্যাম্পটি নির্মাণকাজ শুরু করার আগে সিডিএ শতবর্ষীসহ বিভিন্ন বয়সের শতাধিক গাছ কাটার উদ্যোগ নিয়েছে। রাস্তার মাঝ বরাবর র্যাম্প তুলে এলিভেটেড একপ্রেসওয়েতে যুক্ত করতে গাছগুলো কাটার কোনো বিকল্প নেই বলে সিডিএ জানিয়েছে। তারা জানায়, নগরীর দোতলা রোড হিসেবে খ্যাত রাস্তাটির উপরের রাস্তা থেকে নিচের রাস্তাটি বেশ নিচে। মাঝের খালি জায়গা র্যাম্প নির্মাণে ব্যবহৃত হবে। সিআরবি সংযোগ সড়কের উপর থেকে নিচের সড়কে নামার সিঁড়ির গোড়া পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ মিটার দীর্ঘ মাঝের জায়গা ধরে র্যাম্প নির্মাণ করা হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, র্যাম্প নির্মাণের জন্য সিডিএকে ৪৬টি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে শিরীষ, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া ও পেয়ারা প্রজাতির গাছ। তবে সিডিএ বড় বড় গাছগুলো মার্কিং করে অনুমোদন নিলেও মাঝে থাকা অপেক্ষাকৃত ছোট গাছগুলোও কাটা পড়বে।
এ বিষয়ে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস চাটগাঁ নিউজকে বলেন, দেখুন উন্নয়ন কাজ করতে গেলে কিছু গাছ হয়ত কাটা পড়তে পারে। কিন্তু বিপরীতে আমরা অনেক বেশি সংখ্যায় গাছ রোপনও করি। যেমন আউটার রিং রোডে ২০ হাজার গাছ কাটা পড়েছে। লাগানো হচ্ছে ৫ লাখ গাছ। এই প্রকল্পেও আমরা অনেক গাছ রোপণ করব।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন