নিজস্ব প্রতিবেদক : উচ্ছেদের খবর শুনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে রেলের জায়গায় বসবাস করা অস্থায়ী বাসিন্দারা। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় সন্দ্বীপের নদী ভাঙন কলোনীর প্রায় শতাধিক বাসিন্দা এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
রেল সূত্রে জানা যায়, দখল নৈরাজ্যে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আস্কারা ও ছত্রছায়ায় প্রায় প্রতিদিনই প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে রেলওয়ের মূল্যবান জমি ও সম্পত্তি। অবিরাম দখল নৈরাজ্যের ফলে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন অনেকেই। তবে বারবার দখলমুক্ত করার চেষ্টা করা হলেও কোনভাবেই যেন কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রেলের সম্পত্তি দখল ও লুটপাট অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। তবে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সেই সম্পত্তি দখল মুক্ত করার চেষ্টায়ও বারবার ব্যাহত হচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, আগে আওয়ামী নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় এই সকল কর্মকাণ্ড চললেও এখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এই সকল দখল নৈরাজ্যে জড়িয়ে পড়ছে।
তবে বিক্ষোভকারীরা রেলওয়ের জায়গায় বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি চায়। তারা বলেন, আমরা উচ্ছেদ চাই না। আমরা অবৈধভাবে নয়, বৈধভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে থাকতে চাই।
জাহানারা বেগম (৪২) নামের একজন অস্থায়ী বাসিন্দা বলেন, আমরা নদী ভাঙনের ফলে জমিজমা হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে রেলওয়ে জমিতে বাস করি।আমরাও মানুষ, আমরাই নগরের মূল চালিকাশক্তি। আমরা কখনো ড্রাইভার, কখনো বাসের হেলপার, কখনো বা আপনাদের ঘরের কাজের বুয়া হিসেবে কাজ করছি। আমাদের এই জায়গা থেকে সরিয়ে দিলে আমরা কোথায় গিয়ে থাকবো।
ক্ষোভ প্রকাশ করে কবির হোসেন (৩৮) নামের অপর এক অস্থায়ী বাসিন্দা বলেন, সরকার যদি লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আমাদের দেশে বিনাশর্তে থাকার জায়গা দিতে পারে তবে আমরা কেন পাবো না। আমরা এই দেশের নাগরিক, আমাদেরও বাঁচার অধিকার আছে। আমরাও স্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গা চাই।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন বলেন, রেলের জায়গা বরাদ্ধ দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই, ওইটা মন্ত্রণালয়ের কাজ। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ