রাজনীতি থেকেই সরে দাঁড়ালেন চট্টগ্রামের আলোচিত বৈছাআ নেত্রী! 

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের আলোচিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নারী নেত্রী ফাতেমা খানম লিজা ।

আজ শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে করা এক লাইভ পোস্টে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা নিজেই জানান।

লিজা বলেন, ‘রাজনীতির অঙ্গনে কখনো শূন্যস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কেউ একটি পথ থেকে সরে দাঁড়ালে সেখানে কেউ না কেউ এসে দাঁড়ায়, হয়তো আরও যোগ্য, আরও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একজন।’

চট্টগ্রামে একজন নারী হিসেবে রাজনীতি করতে গিয়ে দলীয় সহকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন— ‘এই শহরে যদি কোনো নারী রাজনীতির মাঠে আসতে চায়, আমি জানি না, তার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করে আছে। তাকে কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, নিজেদের দলীয় মানুষদের মধ্য থেকেও সহিংসতা, হেয় করা, অপমান বা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হতে পারে। এই অভিজ্ঞতা আমি নিজেও অজস্রবার অনুভব করেছি।’

বৈছাআ নেত্রী আরো বলেন, ‘আমি যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলাম, হয়তো তার সবটুকু পূরণ করতে পারিনি। কিন্তু জুলাই আন্দোলনের সাথে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। শহীদদের প্রতি আমি আজও অবিচল শ্রদ্ধাশীল।’

‘রাজনীতি কেবল আবেগ দিয়ে চলে না। কিন্তু একজন নারী যখন সমস্ত বাধা, সামাজিক চাপ, নিরাপত্তাহীনতা ও অপমান উপেক্ষা করে রাজনীতির ময়দানে আসে, তখন যদি তার দলীয় ভাইয়েরাই তাকে হেয় করে, নোংরামি করে, তবে সেই জায়গায় তার জন্য রাজনীতি করার পরিবেশ থাকে না। আর এটাই সবচেয়ে বেদনার।’

নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হয়তো আজকের পর আর কেউ আমাকে রাজনীতির ময়দানে দেখবে না। আমি নিজেও আর ফিরে আসবো না, যতদিন না দেশের প্রয়োজন পড়ে, যতদিন না আবার কোনো রক্তিম জুলাই ডাক দেয়। যদি মাতৃভূমি আমাকে ডাকে, যদি রাজপথ আমাকে প্রয়োজন মনে করে—আমি আবারো ফিরে আসবো।’

বিদায়বার্তার শেষে তিনি বলেন, ‘আমি বিদায় নিচ্ছি কিন্তু একজন নাগরিক, একজন নারী, একজন সংগ্রামী হিসেবে নয়। আমি শুধু দলীয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। দেশের জন্য ভালোবাসা, মানুষের জন্য দায়বদ্ধতা—এইগুলো কখনো থামে না।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লিজা ছিলেন ফ্রন্টলাইনে থাকা হাতে গোনা কয়েকজন নারী নেত্রীর একজন। তবে অনিয়ন্ত্রিত জীবন ও মাদক সেবনের অভিযোগ এনে তাকে গত ১৭ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও এর আগে তার ভেপ (ইলেকট্রিক সিগারেট) ফুঁকার একটি ভিডিও আলোচনার জন্ম দেয়। পরে কেন্দ্র থেকে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিলে এনসিপির সভা সমাবেশে স্বতঃপূর্ত অংশগ্রহণ করতে তাকে দেখা যায়।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top