রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় মোহাম্মদ নাছের (৩৫) নামের এক লেবু ব্যবসায়ীর পথরোধ করে এক হাতের কনুই থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করল দুর্বৃত্তরা। এসময় তার কাছ থেকে নগদ এক লাখ টাকা এবং তার গাড়ি চালকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা।
সোমবার (১০ মার্চ) উপজেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার বড়খোলাপাড়া মনজারটিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার হলেও পুলিশ এখনও কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি, এমনকি কাটা হাতটিও উদ্ধার হয়নি।এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
নাছের উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড নারিশ্চা চৌকিদার পাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। তার বড়খোলাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় লেবু বাগান রয়েছে। এছাড়া তিনি স্থানীয় বাজার থেকে লেবু সংগ্রহ করে ট্রাকে করে ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাটে পাইকারী সাপ্লাই দিতেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশা করে বড়খোলাপাড়া নিজের লেবু বাগানে যাচ্ছিলো নাছের। যাওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে লেবু কেনার জন্য নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে যান। পথে বড়খোলাপাড়ার আগে মনজারটিলা এলাকায় এলে হঠাৎ সংঘবদ্ধ ৫-৬ জন মুখোশধারী ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে তাকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার বাম হাত কনুই থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে তার কাছ থেকে টাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ২৩নং ওয়ার্ডে ফ্লোরে শুয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন নাছের। সোমবার রাতেই অপারেশন করা হয়েছে বলে জানান স্বজনরা।
এসময় তার বড় বোন ইসমত আরা বলেন, আহত নাছের ৯ বোনের একমাত্র ভাই। ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে সে। গেল এক সপ্তাহ আগে তার লেবু বোঝাই একটা ট্রাক তিনি ঢাকা পাইকারী বাজারে পাঠাচ্ছিল। যেখানে ৫ লক্ষাধিক টাকার লেবু ছিল। যাওয়ার পথে ড্রাইভারসহ গাড়িটি নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এই ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করলে পুলিশ জসিম নামে একজনকে ধরে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এই ঘটনার জেরে জড়িত সন্ত্রাসীরা নাছেরের উপর পরিকল্পিত এই হামলা করেছে বলে ধারণা।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বোন ইসমত আরা আরও বলেন, অপারেশনের পর চিকিৎসক বলেছে তার হাতে তিনটি কোপের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া মাথাসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত গাছের সাথে লাগিয়ে হাতটা কাটা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে যায়। তারা অনেক খুঁজেও কেটে নেওয়া হাতটি উদ্ধার করতে পারেননি।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তবে কাটা হাত উদ্ধার হয়নি। এখনো ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
চাটগাঁ নিউজ/জগলুল/এমকেএন/জেএইচ