রাঙামাটিতে চাঁদার টোকেন না থাকায় অটোরিক্সায় আগুন দিলো পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা

রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে টোকেন না নিয়ে গাড়ি চালানোয় যাত্রীবাহি অটোরিক্সায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার সময় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্পোছড়ি এলাকায় এঘটনা ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার সময় দুই রাউন্ড গুলিও ফুটিয়েছে বলে ঘটনার শিকার অটোরিক্সা চালক বানেশর ও যাত্রী হারুন।

ক্ষতিগ্রস্থ অটোরিক্সাটির চালক বানেশ^র জানান,রাঙামাটি শহরের বনরূপা থেকে তিনজন পাহাড়ি যাত্রীকে নিয়ে ঘাগড়া যাওয়ার পথে রাঙামাটি- চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্পোছড়ি এলাকায় পৌছুলে অস্ত্রধারী কয়েকজন চাকমা যুবক সামনে এসেই গাড়ির গতিরোধ করে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়।এসময় চালক ও এক যাত্রীকে টেনে দেপ্পোছড়ি একটি রাস্তার ভেতরে নিয়ে যায় এবং অটোরিক্সাটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড গুলি আকাশে দিকে ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিকভাবেই রাঙামাটি শহরের বনরূপায় রাস্তায় এলোপাতারি গাড়ি রেখে অবরোধ সৃষ্টি করে প্রতিবাদ সভা করেছে অটোরিক্সা চালক সমিতির নেতাকর্মীরা। সমাবেশ থেকে প্রশাসনকে আগামী ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন,বেধে দেওয়া ৭২ ঘন্টার মধ্যে এই পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনাসহ ক্ষতিগ্রস্থ অটো চালককে তার গাড়ির ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সকল শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে রাঙামাটি শহরকে অচল করে দেওয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার ওসি আরিফুল আমিন বলেন, এই ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্খিত। এই ঘটনার সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তিনি জানান,সন্ত্রাসীরা সকলেই পাহাড়ি তবে কোন আঞ্চলিকদলের সেটি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের (২৫ জানুয়ারী) এই দেপ্পোছড়ি এলাকায় কাঠবাহি চলন্ত ট্রাকে ব্রাশ ফায়ার করে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। তারও আগে গত বছর ২০২২ সালের শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) আসামবস্তী কাপ্তাই সড়কের বড় আদমের তঞ্চঙ্গ্যাপাড়ায় জেএসএস এর সহকারী কমান্ডার বিপ্লব চাকমা এবং কালেক্টর রিটন চাকমার নেতৃত্বে আনুমানিক ১০ সদস্যের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ চাঁদা পরিশোধ না করায় ৬টি সিএনজি অটোরিকশা এবং ১টি পাথর বোঝাই ট্রাক আটক করে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর দুইটি টহল দল ঘটনাস্থলে গমন করে সিএনজি অটোরিক্সাগুলো উদ্ধার করে।

এরপর ১৬ই সেপ্টেম্বর রাঙামাটি-আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে চাঁদার দাবিতে আরো একটি অটোরিক্সা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিলো আঞ্চলিকদলীয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। রাঙামাটি শহরের অদূরেই এই ধরণের সশস্ত্র তৎপরতায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় রাঙামাটির সর্বত্রই গাড়ি চালকদের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়তই।

Scroll to Top