রাঙামাটি প্রতিনিধি: কোনো প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই প্রকাশ্য দিবালোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই পর্যটন শহর রাঙামাটিতে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে গবাধি পশুর মাংস। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট্ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই এখানকার মাংস বিক্রেতারা প্রকাশ্যে রাস্তার পাশে গর্ভবতী ও রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করছে।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের পাশে অন্তত ৫টি গরু জবাই করেছে। তারমধ্যে একটি গরুর পেটের মৃত বাচ্চাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয় কসাইরা। পরবর্তীতে কুকুর ও কাক মিলে এই মৃত বাচ্চাটিকে ছিঁড়ে খেতে দেখা গেছে।
বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার শহরের তবলছড়ির বটতলার রবি ও বনরূপার মাছ বাজারের ভেতর শাহ আমান মাংসের দোকানে গাভী গরুর মাংস বিক্রি করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে তাদের ফোন করা হলে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
প্রতিনিয়ত হাজারো পর্যটকের আগমনের একটি পর্যটন শহরে প্রকাশ্য-দিবালোকে এই ধরনের অপকর্ম করার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি শহরের ৬টি দোকানে বিক্রির জন্য ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় ৫টি গরু জবাই করা হয়। নিয়ম অনুসারে জবাইয়ের সময় একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, একজন বাজার কর্মকর্তা ও একজন পশু চিকিৎসক এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে জবাইয়ের আগে গরুগুলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা থাকলেও মঙ্গলবার সংশ্লিষ্টদের একজনও উপস্থিত ছিলেন না।খোদ কসাই ও পশু চিকিৎসক নিজেরাই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জবাই করার আগে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার জন্য দায়িতপ্রাপ্ত চিকিৎসক কেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে কসাই জাফর জানান, কেউই ঘটনাস্থলে আসেনি আমরা কি করবো। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পৌরসভাকে একটি গরুর জন্য ১০০ টাকা দিতে হয়। জবাইয়ের আগে কোনো পশু চিকিৎসক পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসেন না। তাই স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছে সবাই।
এদিকে পৌরসভার বাজার কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, গরু জবাইয়ের আগে সে পশুটিকে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জবাইয়ের পর মাংসের মধ্যে সীল মেরে সেই মাংসকে হালাল ঘোষণা করার দায়িত্ব একজন পশু চিকিৎসকের। সেটি আমাদের পৌরসভার দায়িত্ব নয়।
রাঙামাটির উপ-সহকারী প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আবু তাহের জানিয়েছেন, অসুস্থ থাকার কারণে মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি। এছাড়া রোগাক্রান্ত বা গর্ভবতী গরু জবাই করলে এবং তা প্রমাণিত হলে ৬মাসের দন্ড হতে পারে।
বিষয়টি রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলামের নজরে আনা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট্যদের নির্দেশনা প্রদান করবো।
চাটগাঁ নিউজ/এমআর