রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে কাঠবাহি ট্রাকে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টার সময় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্পোছড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আকস্মিক গুলিবর্ষণে কাঠভর্তি ট্রাকের চালক ছৈয়দ আলম বামপায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হয়। এসময় ট্রাকের(চট্টমেট্রো-ট-১১০৭৯৯) সামনের দু’টি চাকা গুলিতে ফেটে যায়।
ট্রাকে অবস্থান করা কাঠের চালানদার জাকির হোসেন জানিয়েছেন, সকালে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার পর দেপ্পোছড়ি এলাকার উচু রাস্তা বেয়ে উঠার সময় রাস্তার ডান পাশের জঙ্গল থেকে আকস্মিকভাবে ব্রাশ ফায়ার করা হয়। এতে ট্রাকের দুই চাকা ফেটে যায় এবং গাড়ির বড়ি ছিদ্র হয়ে চালকের পায়ে গুলি লাগে। এরপর আমি চালককে নিয়ে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চলে আসি। আহত চালক ছৈয়দের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন রানীরহাটের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় বলে জানা গেছে।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শওকত আকবর জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ছৈয়দ নামের একজন চালককে হাসপাতালে আনার সাথে সাথেই আমরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেছি এবং তিনি বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল আমিন।
এদিকে, এই ঘটনায় বেলা এগারোটার দিকে রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বিক্ষুব্ধ ট্রাক চালকরা।
উল্লেখ্য, এরআগেও চলতি বছরের (২৫ জানুয়ারী) এই দেপ্পোছড়ি এলাকায় কাঠবাহি চলন্ত ট্রাকে ব্রাশ ফায়ার করে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। তারও আগে গত বছর ২০২২ সালের শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) আসামবস্তী কাপ্তাই সড়কের বড় আদমের তঞ্চঙ্গ্যাপাড়ায় জেএসএস এর সহকারী কমান্ডার বিপ্লব চাকমা এবং কালেক্টর রিটন চাকমার নেতৃত্বে আনুমানিক ১০ সদস্যের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ চাঁদা পরিশোধ না করায় ৬টি সিএনজি অটোরিকশা এবং ১টি পাথর বোঝাই ট্রাক আটক করে।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর দুইটি টহল দল ঘটনাস্থলে গমন করে সিএনজি অটোরিক্সাগুলো উদ্ধার করে। গতবছরের( ১৬ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটি-আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে চাঁদার দাবিতে আরো একটি অটোরিক্সা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিলো আঞ্চলিকদলীয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। রাঙামাটি শহরের অদূরেই এই ধরনের সশস্ত্র তৎপরতায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় রাঙামাটির সর্বত্রই গাড়ি চালকদের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়তই।