রাঙামাটি প্রতিনিধি: পাহাড়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে উপজাতীয় সশস্ত্র চাঁদাবাজরা। তথাকথিত জাতিগত অধিকার আদায়ের নামে পাহাড়ে উপজাতীয় গোষ্ঠিগুলোর অন্তত ৬টি সংগঠনের অব্যাহত চাঁদাবাজিতে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে চলমান কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন থমকে গেছে।
ইতিমধ্যেই রাঙামাটির বিলাইছড়ি-কাপ্তাই সড়কে কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কয়েক দফা চাঁদা উত্তোলনের পর আবারও চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত (৩ ফেব্রুয়ারী) চন্দ্রঘোনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা’র সাহিদুল আমিন নামে এক উপ-ঠিকাদার।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার উপ-ঠিকাদার সাহিদুল আমিন জানান, ‘রাঙামাটির বিলাইছড়ি কারিগর পাড়া হতে লেমুছড়ি পর্যন্ত আমাদের কাজ চলমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে শ্রমিকদের কাজ করতে নিষেধ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে শ্রমিকরা প্রাণভয়ে চলে গেছে। আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজ সুষ্ঠুভাবে যেন করতে পারি সেজন্য সন্ত্রাসীদের আমরা কয়েক দফায় চাঁদার টাকা পরিশোধ করেছি। চাঁদার টাকা দেওয়ার পর তারা আরও দ্বিগুণ চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে কাজ করলে শ্রমিকদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। হুমকি পেয়ে আমি রাঙামাটির চন্দ্রঘোনা থানায় জিডি করেছি। এখন কাজ বন্ধ রয়েছে। আমার সকল প্রস্তুতি থাকার পরও কাজ করতে না পারায় আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।’
চন্দ্রঘোনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনচারুল করিম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমরা জিডিটি আমলে নিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছি। আদালতের অনুমতি পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাঙামাটি এলজিইডি’র দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও কে বা কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত সেটি অবগত নন বলে জানান। তিনি বলেন, আসলে ঘটনার আকস্মিকতায় ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই প্রচন্ড রকমের ভয় পেয়ে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে গেছে।
রাঙামাটি এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহম্মদ শফি বলেন,‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার পক্ষ থেকে বিষয়টি আমাদের লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছেন বলে জেনেছি। সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে যেহেতু কাজ বন্ধ ছিল তাই আমরা ঠিকাদারের সময় বৃদ্ধি করে হলেও উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো।