রাউজানে নামাজে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা

রাউজান প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে রাউজানে জুমার নামাজে যাওয়ার পথে দূর্বৃত্তের গুলিতে জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে অপর একজন গুলিবিদ্ধ হন।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ১ টার দিকে রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আছাদ আলী মাতব্বর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম একই এলাকার আবু ছৈয়দ মেম্বারের বড় ছেলে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের রয়েছে।

নগরীর চাকতাইয়ে জাহাঙ্গীর ট্রেডার্স নামে তাঁর একটা শুটকির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও নোয়াপাড়ায় মকসুদ কমিউনিটি সেন্টার নামে তাঁদের একটি পারিবারিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় বি-ব্লকে বসবাস করতেন।

এই ঘটনায় আব্বাস উদ্দিন (২৭) নামে আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আব্বাস উদ্দিন সম্পর্কে নিহত জাহাঙ্গীরের ভাগিনা এবং মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার। তিনি বর্তমানে নগরীর এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিহত জাহাঙ্গীর আলম গ্রামের বাড়িতে জুমার নামাজ পড়তে মোটরসাইকেল যোগে চট্টগ্রাম নগরী থেকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন। তার সাথে ছিলেন ভাগিনা আব্বাস উদ্দিন। তারা স্থানীয় আসদ আলী মাতব্বর বাড়ির জামে মসজিদের সামনে গেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা চালায়। প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাত করে জাহাঙ্গীরকে মাটিতে ফেলে দেয় তারা। পরে জাহাঙ্গীর ও তার ভাগিনাকে গুলি করে। এসময় তাদের রক্ষা করতে মুসল্লিরা এগিয়ে এলে মুসল্লিদের কয়েকজনও এই দূর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয় বলে জানা যায়। তবে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে এখনো অজানা।

নিহতের ছোট বোনের স্বামী সিরাজ-উদ্ দৌলা বলেন, জাহাঙ্গীর আলম ও তার ভাইদের কেউ রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তিনি ১০ দিন মালয়েশিয়া সফর করে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফিরেন। আজ জুমার দিনে মা-বাবার কবর জেয়ারত করতে এবং এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে গ্রামের বাড়িতে আসেন।

তিনি বলেন, তার কোনো শত্রু নেই। তবে, ধারণা করছি কেউ তার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নিহতের চাচাত ভাই ইকবাল মাসুদ বলেন, তিনি এলাকায় দানবীর ও সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাড়ির পাশে নিজস্ব জায়গায় মাদ্রাসা নির্মাণের কথা চলছিল। আমি যত্তদূর জানি তার প্রকাশ্য কোনো শত্রু নেই। তবে, কে বা কারা কি কারণে তাকে হত্যা করছে জানি না। এদেশে আমাদের মত সাধারণ মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। পুলিশ প্রশাসনের নীরব ভুমিকা সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার এডিশনাল এসপি মোহাম্মদ রাসেল বলেন, এখনও পর্যন্ত ঘটনার কোন ক্লু পাওয়া যায় নি, কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় নি। একটা সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া গেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

এদিকে, পুলিশ হতাহতের ঘটনা তদন্তসহ জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী।

চাটগাঁ নিউজ/জয়নাল/এসএ

Scroll to Top