রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ

রাউজান প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাউজান উপজেলার ১৪ বাগোয়ান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোয়েপাড়া গ্রামের চৌধুরী পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমন, বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল, বাগোয়ান ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও বিএনপি কর্মী মোহাম্মদ সোহেল। এরা প্রত্যেকেই একই এলাকার বাসিন্দা এবং বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তারা চিকিৎসকধীন রয়েছেন।
এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ সুমনের বুকে গুলি লাগায় তার অবস্থা আশঙ্কা জনক বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তখন কাউকে পাইনি। বর্তমানে আমরা অভিযানে আছি। ঘটনায় জড়িতের আটকের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার ইমাম ও হারুন একসাথে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে রাজনীতিতে যুক্ত ছিল। সম্প্রতি ইমাম হারুনের সঙ্গ ত্যাগ করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ইসতিয়াক অভির সাথে যোগ দেয়। এই নিয়ে উভয়পক্ষে বিরোধ দেখা দেয়। যার কারণে দুইদিন পূর্বে উভয় গ্রুপের মধ্যে মারামারি ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

গত বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ইসতিয়াক অভির বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী সুজন চক্রবর্তর প্রকাশ মিন্টু সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় বেল বাজায়। অভি ও তার সঙ্গীরা মিন্টুকে বেল বাজানো কারণ জিজ্ঞেস করে চড়থাপ্পড় দেয়।

পরে অভি ও তার সঙ্গীরা বাড়ির পাশে পুকুর ঘাটে বসে আড্ডা দেয়। রাত ১০ টার দিকে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী আব্দুল্লাহ সুমনের নেতৃত্বে ৪/৫ জন পুকুর ঘাটে এসে অভি ও তার অনুসারীদেরকে সুজন চক্রবর্তী প্রকাশ মিন্টুকে থাপ্পড় মারার কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন উভয়পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক, হাতাহাতি ও মারামরির একপর্যায়ে অভি ও সঙ্গীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে আব্দুল্লাহ সুমন ও সঙ্গীয় ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়।

এদিকে গোলাম আকবর খন্দকার অনুসারী হিসেবে পরিচিত উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাবি করেন, আসন্ন ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের প্রস্তুতি সভা শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ইসতিয়াক চৌধুরী অভির নেতৃত্বে আলতাফ চৌধুরী টুটুল, জনি চৌধুরী সহ ৭/৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী অতর্কিত গুলি করে তাদের ৫ জন অনুসারীকে গুলিবিদ্ধ করেন। এদের মধ্যে উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ সুমনের অবস্থা আশংকা জনক। তিনি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানান।

রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, আমরা সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। বিষটি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জাড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ইতোমধ্যে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।

চাটগাঁ নিউজ/জয়নাল/এমকেএন

Scroll to Top