রাউজানের মহামুনি গ্রামে ডাকাতি

রাউজান প্রতিনিধি: আপনারা কিছু লিখিয়েন না, পরে ওরা আমাদের মেরে ফেলবে। আমাদের নিরাপত্তা দিবে কে? যা হওয়ার হয়েছে আমরা পুলিশকে জানাব না।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের রাউজানে গৃহকর্তী মিতা বড়ুয়া ভয়ে-আতঙ্কে করজোড় মিনতি করে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া প্রতিবেদককে সংবাদ প্রচার না করার জন্য অনুরোধে এসব কথা বলেন।

গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা হতে সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহামুনি গ্রামের যোগেন্দ্র আরাম বিহার সংলগ্ন মৃত সুদর্শন বড়ুয়ার বাড়িতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

চারদিকে পাকা সীমানা প্রাচীরে ঘেরা পাকাভবনে বাড়িতে থাকেন গৃহকর্তী মিতা বড়ুয়া, তার এক পুত্রবধু ও দুই নাতি। বড় ছেল স্বপরিবারে ফ্রান্সে এবং ছোট ছেলে চাকরির সুবাদে চট্টগ্রাম নগরীতে থাকেন।

গৃহকর্তী মিতা বড়ুয়া বলেন, রাত দেড়টার দিকে আমার কক্ষে ৮ জনের একটি দল প্রবেশ করে আমার হাত-পা, মুখ বেঁধে ফেলে। আমাকে বলে ওয়ান ব্যাংক হতে যে এক লাখ টাকা তুলছি তা দিতে। তখন আমাকে কিছু বলতেও দিচ্ছে না। তাদের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র ছিল।

তারা রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ঘরে অবস্থান করেন। পরে আমাকে ঘর হতে টেনে বের করেন। আমি মনে করেছিলাম আমাকে মেরে ফেলবে। পরে আমার ছেলের বউ এর কক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে মোবাইল গুলো নিয়ে চলে যায়।

যাওয়ার সময় বলেন, পুলিশকে জানালে পরে এসে মেরে ফেলব। আমার ছেলে ঘরে থাকলে তাকে মেরে ফেলত তারা। পরে ভোর ৪টার দিকে জানালা দিয়ে বিহারের ভান্তেকে ডেকে বলি আমার ঘরে ডাকাতি হয়েছে। আমার ভাই, মেয়ের জামাইকে একটু খবর দিন।

ডাকাত দল কি নিয়েছে জানতে চাইলে, ঘরে ডাকাত ঢুকলে কি খালি হাতে যায়? কি নিয়েছে তা আমি বলব না। পুলিশকেও জানাব না।

গৃহকর্তীর ভাই মহামুনি এংলো পালি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জন বড়ুয়া বলেন, আমার বোনের ঘরে কোন পুরুষ নেই। আগে কখনও চুরি-ডাকাতি হয়নি। এবার ডাকাতরা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইলসহ নানা জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অর্পিতা মুৎসুদ্দি বলেন, একলা ঘরে ডাকাত ঢুকে নানা জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কি কি নিয়েছে তা গৃহকর্তী প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করছে। পরবর্তী ডাকাতি ও জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে তারা কোন মামলা করবে না।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আমাদের কেউ মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে অভিযোগ করেন নি। এইমাত্র আপনার কাছ থেকে সংবাদ পেয়েছি। আমাদের পুলিশের একটি দলকে ঘটনা পরিদর্শন ও তদন্তের জন্য প্রেরণের ব্যবস্থা নিচ্ছি।

চাটগাঁ নিউজ/জয়নাল/এমকেএন

Scroll to Top