রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে ৪’শ অভিযানের ছক কষছে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক : রমজানে নানা কারসাজি আর তেলেসমাতি কাজ-কারবারে অস্থিতিশীল হয়ে উঠে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার। অসাধু ব্যবসায়ীরা এ রমজানকে টার্গেট করে মেতে উঠে ভোক্তা সাধারণের পকেট কাটার খেলায়। কখনো মজুতের মাধ্যমে কৃৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, কখনো সিন্ডিকেটবাজি, প্রশাসনকে চাপে ফেলে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে সংশ্লিষ্টরা। তাই রমজানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পুরো মাস জুড়ে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় প্রায় চারশত অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরী ও ১৪টি উপজেলায় এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

ভোক্তা সাধারণ বলছেন, প্রতি বছর রমজান মাসে জেলা প্রশাসনের এমন রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করা হয়। এমন অভিযানে ছোট ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বড় ব্যবসায়ীরা অধরাই থেকে যান। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের এ অভিযান কার্যক্রমে কেমন হতে পারে রমজানের বাজার? নাকি প্রশাসন আর অসাধু ব্যবসায়ীদের চোর পুলিশ খেলাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে রমজানের বাজার।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যবসায়ী ও বাজার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে নানামুখী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

অভিযান পরিচালনার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মহানগরে ৬টি আর উপজেলায় ১৫টি সার্কেলে মোট ৪০০ অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিদিন মাঠে থাকবে জেলা প্রশাসনের টিম। কৃষি অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তরও মাঠে থাকবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইতোমধ্যে ১৫ উপজেলায় ১৫টি মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। নগরীতে করা হয়েছে ৬টি সভা।

তিনি বলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সকল দপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রমজানে ভোক্তা সাধারণ স্বস্তিতে যাতে বাজার করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও জানান, শুধু নিত্যপণ্য বা কাঁচাবাজার নয়, ওষুধ, কাপড় চোপড় বা বিভিন্ন শপিং মার্কেটেও অভিযান চালানো হবে। রমজানের প্রতিটি দিন চট্টগ্রাম জুড়ে জেলা প্রশাসনের টিম মাঠে থাকবে। এক্ষেত্রে বাজার অস্থিতিশীল যাতে না হতে পারে সেজন্য ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে যথাযথ সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। রমজানে ভোগ্যপণ্যে বাজার অস্থিতিশীল হবে না বলে ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

তবে এ নিয়ে বাংলাদেশ কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নাজের হোসাইন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর অভিযান চালানো হয়। তবে এতে ভোক্তা সাধারণের তেমন সুবিধা হয় না। এবারও এসব অভিযান যদি প্রশাসনিক রুটিন ওয়ার্ক বা লোক দেখানো হয়ে থাকে তাহলে বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হবে না, ব্যবসায়ীদের লাভ হবে।

তবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রশাসনকে কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে এক্সক্লুসিভলি কয়েকজন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ দায়িত্ব দিতে হবে। তাদের কাজ হবে শুধু বাজার মনিটরিং। এর ফাঁকে ফাঁকে ডিসি মহোদয়ও বাজারে যাবেন। মাঠ পর্যায়ের পাশাপাশি রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ থাকতে হবে বলে মত দেন ক্যাবের এই নেতা।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ

Scroll to Top