রইস হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল চট্টগ্রাম, বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ

পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আহত অনেক

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ছাত্র সেনার ঢাকা নগরের সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনের খুনিদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত। অবরোধ পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

সোমবার (৫ মে) চট্টগ্রাম নগর ও বিভিন্ন উপজেলায় দলটির নেতাকর্মীরা সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচি পালন করে।

জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণার আলোকে সোমবার সকালে নগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, একে খান ও সল্টঘোলা ক্রসিং এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়। এসময় সল্টঘোলা ক্রসিং এলাকায় কর্মসূচি পালন করতে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এছাড়া নগরীর মুরাদপুর এলাকায় সুন্নীদের সাথে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মুরাদপুরের পরিস্থিতি এখনও থমথমে রয়েছে।

শহরের বাইরে হাটহাজারী, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এসময় কোথাও কোথাও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আলেম হত্যার বিরুদ্ধে এখন আর কোনো নরম প্রতিবাদ হবে না। মাওলানা রইস উদ্দিনকে যারা হত্যা করেছে, তারা শুধু একজন মানুষকে নয়, ধর্ম, মসজিদ ও ইসলামিক মূল্যবোধকে আঘাত করেছে। এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত, নির্মম এবং স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রীয় নীরবতার প্রশ্রয়ে ঘটেছে।

যে দেশে আলেম নিরাপদ না, সে দেশে কেউই নিরাপদ নয়। বিচারহীনতা আর ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। কিন্তু এবার আমরা আর চুপ থাকবো না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই-তদন্তের নাটক নয়, দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি চাই। নইলে সড়ক তো বন্ধই থাকবে, প্রয়োজনে সারাদেশ অচল করে দেব। প্রশাসন যদি পক্ষ নেয় খুনিদের, তাহলে জনগণের আদালতই রায় দেবে।

এর আগে গত শনিবার (৩ মে) চট্টগ্রামে আয়োজিত এক সমাবেশে ৪ মে ‘মার্চ টু গাজীপুর’ এবং ৫ মে সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সুন্নাত ওয়াল জামাআতের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনউদ্দিন আশরাফী।

এদিকে, অবরোধের কারণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এতে করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগীরা।

নগরীর পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, মুরাদপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে আমরা তাদের সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু তারা কোন ভাবেই বুঝবে না, তারা রোড ব্লক করবে, সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ বাড়াবে। পরে আমরা সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশে টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করি। তখন তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ১০ জন মতো আমরা আটক করছি। হতাহতের সংখ্যা জানি না।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top