রামু প্রতিনিধিঃ রামুতে যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে ঘরছাড়া করেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এমনই অভিযোগ তুলেছে গৃহবধু গুলজার বেগম।
ঈদের সময় সাধারনত সবাই ধর্মীয় উৎসবে আনন্দ উল্লাসে ব্যস্ত সময় কাটান, ঠিক সেই সময়ে রামুর গৃহবধূ গুলজার বেগমকে বাবার বাড়ি থেকে ইফতার এবং ঈদ সামগ্রীসহ পূর্বে দাবি করা যৌতুকের টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে শারীরিক নির্যাতন করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে পাষণ্ড স্বামী ও তার পরিবার। লোহমর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড লট উখিয়ারঘোনা এলাকায়। এই ঘটনায় রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে গৃহবধূ গোলজার বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ বছর আগে ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর হাইটুপির বাসিন্দা মৃত এরশাদ উল্লাহর মেয়ে গুলজার বেগমের সাথে একই ইউনিয়নের খেনছরঘোনার বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের সন্তান আবু তাহের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শুরু থেকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল তার পাষন্ড স্বামী আবু তাহের।
অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী গুলজার বেগম বলেন, প্রায় সময় আমার গরীব বাবা থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য বলত তারা। আমার বাবা একজন গরিব কৃষক ছিলেন। অসুস্থতায় তিনিও মারা গেছেন। সম্প্রতি গেল রমজানের ২৮ পরিবার থেকে ইফতার এবং ঈদ সামগ্রী না দেয়ায় তার শাশুড়ী নূর জাহান বেগম বিভিন্নভাবে হেনস্তা ও শারীরিক নির্যাতন করে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে গৃহবধু আরও জানান, ২৮ রমজানের দিন হামলায় তারা ক্ষান্ত না হয়ে পুনরায় ১৩ই এপ্রিল (ঈদের পরদিন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্বামী আবু তাহের, দেবর সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে গুরুতরভাবে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগী গুলজার বেগমের ভাই সেলিম এবং তোফাইল গিয়ে উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করেন তাকে। এ ঘটনায় তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নিজের এবং সন্তানদের নিরাপত্তা প্রার্থনা করেছেন প্রশাসনের কাছে।
গৃহবধূ গোলজার বেগমের ছোট ভাই তোফাইল বলেন, ঘটনার দিন আমার বোনের জামাই আবু তাহের নিজেই জানান আমার বোনের উপর আঘাতের কথা। আমরা তাকে গিয়ে উদ্ধার করে রামু হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমরা প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। আমরা আমাদের বোন ও বোনের সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবু তাহের দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি তদন্তাধীন আছে বলে জানান। সেই সাথে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন