‘যেই দিন চলের শাক-তরহারি দিই ভাত খন মুশকিল অই যারগুই’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইলিশের মৌসুমেও বাজারে দাম চড়া। সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রুই, কাতলা, মাগুর, মৃগেল, কার্পসহ সাগরের বেশিরভাগ মাছ। তাই মাছে-ভাতের বাঙালি দিন দিন কম দামি ছোট মাছের দিকে ঝুঁকছেন।

আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়ি, বকশির হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্বাদু পানি বা সাগরের বড় আকারের মাছ গড়ে ৩০০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বাদু পানির বড় রুই (দেড় থেকে ‍দুই কেজি ওজনের) মাছ কেজি ২৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা (এক/দেড় কেজি ওজন) ২৫০ টাকা , কার্প মাছ কেজি ২৪০-২৫০ টাকা।

চট্টগ্রামের ভাষায় জিঁয়াল মাছ বলে পরিচিত শিং মাছের (হ্যাচারি) দাম কেজি ৬৫০-৭০০ টাকা, আফ্রিকান বড় মাগুর মাছ ২০০-৩০০ টাকা, থাই কই কেজি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪০০ টাকা দরে। চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ৬০০ -৯০০ টাকা কেজিতে।

অন্যদিকে, সাগরের মাছ পোয়া ৩০০-৩৫০ টাকা, লটিয়া কেজি ১৮০-২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৩৫০ টাকা, ছুরি ২৬০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ইলিশের দাম তো আকাশচুম্বী। সাইজ ভেদে বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৮০০-৯০০ টাকা। কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকা। সে তুলনায় ছোট আকারের স্বাদু বা সাগরের মাছের দাম ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিতে চার/পাঁচটি মাছ ধরে এমন সাইজের রুই বা মৃগেলের দাম ১৫০-১৭০ টাকা, ছোট আকারের পোয়া মাছ কেজি ১৫০ টাকা, ছোট টুনা (নারকেল মাছ) কেজি ২০০ টাকা, সাগরের পাঁচ মিশালী মাছ কেজি ১৫০ টাকা, ফাইস্যা মাছ কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে আসা গৃহিনী হামিদা আকতারের সাথে কথা বলা হলে তিনি চাটগাঁ নিউজকে বলেন, ‘যেই দিন চলের শাক-তরহারি দিই ভাত খন মুশকিল অই যারগুই। ’

তিনি বলেন, ৩০০-৩৫০ টাকার নিচে কোনো মাছ নাই। পুকুরের মাছ বা সাগরের মাছের একই দাম। তারচেয়ে ছোট মাছ অনেক ভালো। ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।

কাজীর দেউড়ি মাছ ব্যবসায়ী মো. বাহার মিয়ার সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, বড় মাছের কাস্টমার কম। যাদের টাকা আছে তারা বড় মাছ কিনছে। ইলিশ মাছের দাম বেশি, সবার কেনার সামর্থ্য নেই।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘মানুষ আর পেরে উঠছে না। অনেকে খাদ্য তালিকা থেকে আমিষ বাদ দিচ্ছে। যদিও মাছ-মাংস আর সবজির দাম কাছাকাছি, তবে সবজি অল্প পরিমাণে কেনা যায়। কিন্তু মাছ-মাংস চাইলেও অল্প পরিমাণে কেনা যায় না, সেই ব্যবস্থা আমাদের নেই।’

চাটগা নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ

Scroll to Top